বিশ্বমানব
শিক্ষায় পবিত্র কুরআনের আলো। [ সুরা—৪ নিসা—১২৬ থেকে ১৩০ আয়াত।]
১২৬) আকাশ ও
পৃথিবীর যা কিছু আছে সব আল্লাহ্র, এবং সব কিছুকেই আল্লাহ্ পরিবেষ্টন করে আছেন।
মর্মার্থঃ—এই
আয়াত অনুসারে প্রতিটি জীব ও বস্তু আল্লাহ্র, এই জ্ঞান মানুষের না থাকলে সেই মানুষ
আল্লাহ্কে জানতে সক্ষম হবে না। আর তাঁকে জানতে না পারলে মানুষ নিজেকেও তাঁর
বান্দারূপে বিশ্বাস করতে পারবে না। এই সব ব্যক্তিই হলো অবিশ্বাসী ও অত্যাচারী।
১২৭) এবং লোকে তোমার কাছে নারীদের বিবাহের
বিবাহের অনুমতি চায়। বল, আল্লাহ্ তোমাদেরকে তাদের (বিবাহের) অনুমতি দেন এবং কুরআনে তোমাদেরকে
যা যা পাঠ করে শোনানো হয় তা ঐসব পিতৃহীনা নারীদের বিধান, যাদেরকে তোমরা নির্ধারিত
অধিকার প্রদান কর না এবং বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করার বাসনা রাখ। আর অক্ষম শিশুদের
বিধান এই যে, এতিমদের জন্য ইনসাফের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক। এবং তোমরা যেকোন সৎকাজ কর
আল্লাহ্ তা সবিশেষ অবহিত।
মর্মার্থঃ—কুরআনের
জ্ঞান লাভ করে আগে নিজের অন্তর্জগৎ ও বহির্জগৎ জ্ঞান দ্বারা শাসন করতে শিখতে হবে,
তারপর নিজেকে সৎকর্মশীল রূপে গড়ে তুলতে হবে, তবেই এখানে বিয়ের প্রসঙ্গ আসবে মানুষের
জন্য। মনে রাখতে হবে নারীরা স্বামীর গৃহে আসে পবিত্র জ্ঞান লাভ করে, সেই গৃহকে
আল্লাহ্র পবিত্র গৃহ করে শান্তির আবাসস্থলরূপে গড়ে তোলার জন্য। বিয়ের আগে ও পরে
কোন নারী যেন পরিবেশ ও পরিস্থিতির শিকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই বিয়ের কাজে
এগিয়ে যেতে হবে।
১২৮) কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীর দুর্ব্যবহার ও
উপেক্ষার আশংকা করে, তবে তারা আপোষ নিষ্পত্তি করতে চাইলে তাদের কোন দোষ নেই।
বস্তুত আপোষ করা অতি উত্তম। কিন্তু মানুষ লালসার প্রতি আসক্ত; এবং যদি তোমরা
সৎকর্মপরায়ণ ও সাবধান হও তবে তোমরা যা কর আল্লাহ্ তার সংবাদ রাখেন।
মর্মার্থঃ—মানুষ
পশুর অধম হয়ে লালসার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে,
জীবন সত্যকে না জানার জন্য। নারী- পুরুষ উভয়ের সত্যজ্ঞান লাভ করার পরেই
সংসার জীবনে প্রবেশ করা উচিত। তা- নাহলে কেউ সাবধানী হয়ে চলতে সক্ষম হবে না এবং
আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারবে না।
১২৯) তোমরা যতই ইচ্ছা কর না কেন, তোমাদের
স্ত্রীদের প্রতি সমান ব্যবহার করতে কখনই পারবে না, তবে তোমরা কোন এক জনের দিকে
সম্পূর্ণভাবে ঝুঁকে পড় না ও অপরকে ঝোলান অবস্থায় রেখ না; আর যদি তোমরা নিজেদের
সংশোধন কর ও সাবধান হও তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
মর্মার্থঃ—মানুষ
একের অধিক স্ত্রীর প্রতি আসক্ত হলেও তাদের প্রতি সমান নজর দিতে সক্ষম হয় না।
সেক্ষেত্রে কখনোও একের অধিক স্ত্রী গ্রহণ করা বিশ্বাসীদের উচিত হবে না। আল্লাহ্
ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু হয়ে তাদেরই অন্তরে সদায় জাগ্রত থাকেন যারা অন্তর থেকে সবার
প্রতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
১৩০) যদি
তারা পরস্পর পৃথক হয়ে যায় তবে আল্লাহ্ তাঁর প্রাচুর্য দ্বারা তাদের প্রত্যেককে
অভাবমুক্ত করবেন। বস্তুত আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময়।
মর্মার্থঃ—আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময় হয়ে তাদেরই
অন্তরে জাগ্রত থাকেন, যাদের অন্তর উদার ও সবার জন্য উন্মুক্ত। যারা সংকীর্ণমনা
তাদের কাছ থেকে পৃথক থাকা একান্ত প্রয়োজন উদার মনের নারী- পুরুষদের। সংকীর্ণমনের
নারী- পুরুষ কখনও উদার অভাবমুক্ত হতে পারে না।
জয়
বিশ্বমানব শিক্ষা ও পবিত্র কুরআনের আলোর জয়।
No comments:
Post a Comment