বর্তমান বৈজ্ঞানিক যুগেও চলছে চারিদিকে শুধু
নীতির বদলে দুর্নীতি, সততার বদলে চরম অসাধুতা। জীবনযাত্রার মতে ও পথে সেখানে মিল
নেই, জীবনের সঙ্গে যোগ নেই, সেই মতবাদের বাহাদুরি কোথায়? সেটা কোন মতই নয়। আজ
আমাদের কথার সাথে অন্তরের মিল নেই। সর্বত্রই শুধু ছলবল কৌশল আর মিথ্যা প্রবঞ্চনা।
বেদের যুগে এমন ছিল না। বেদ যজ্ঞকারীরা সকলেই ছিলেন সাম্যের পূজারী। সাম্যের আদর্শ
বড় আদর্শ। যারা সত্যিকারের সাম্যের পূজারী, একমাত্র তাঁরাই নিঃস্বার্থভাবে নিজেদের
মহৎ কাজে উৎসর্গ করে দিতে পারেন। বেদজ্ঞরা তাই করতেন বলেই ভারতবাসী আজও তাঁদের
মাথায় করে রেখেছেন। যে নীতিতে কোন বৈষম্য থাকবে না, কোন দলীয় বা সাম্প্রদায়িক
চিন্তা থাকবে না, ‘আমার’ বলে কোন কথা থাকবে না, যে মতবাদ সকলে সমানভাবে গ্রহণ করবে—সেটাই
বেদ ও সকলের জীবন দর্শন। দেশের সকলকে নিয়ে যে চিন্তা সেটাই প্রশস্ত বেদ দর্শন।
বেদের যুগে দেশ জূড়ে ছিল একজাতি, একনীতি, একসুর। গোটা দেশটাই ছিল একান্নভুক্ত
পরিবারের মত। গোটা দেশটাই ছিল একান্নভুক্ত পরিবারের মতো। গোটা দেশটাকে তখন সবাই
নিজের বাড়ী আর দেশবাসীকে নিজের ভাই বোন মনে করে কাজ করতো। সকলের কাজেরই ছিল সমান
মর্যাদা। ধনী গরীবের মাঝে কোন বিভেদ ছিল না, সমাজে কোন বিবাদ বিচ্ছেদ, দলাদলি বা
সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। সর্বত্র তখন এক সমতার ঢেউ বইতো, সাম্যের সুর প্রবাহিত হতো।
সবাই ছিল তখন সমসুরে বাঁধা, একনীতিতে গাঁথা। সকলেই বেদ যজ্ঞে লিপ্ত থেকে
জনকল্যাণমুখী কর্মে লিপ্ত থেকে নিজেকে বেদের কর্মী তথা বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী
ভেবে বসুধার সবায়কে আত্মীয়তার সুত্রে বেঁধে রাখতো নিজে অন্তরে বিশ্ববোধে জাগ্রত
হয়ে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।
No comments:
Post a Comment