বিশ্বমানব শিক্ষায়
পবিত্র কুরআনের আলো। [ সুরা—৫ মিয়াদাহ—৬১ থেকে ৬৫ আয়াত।]
৬১) এবং তারা যখন তোমাদের নিকট আসে তখন বলে,
আমরা বিশ্বাস করি, কিন্তু তারা অবিশ্বাসসহ আসে এবং তা নিয়েই বের হয়ে যায়। এবং তারা
যা গোপন করে আল্লাহ্ তা বিশেষভাবে অবহিত।
মর্মার্থঃ—অন্তঃকরণ পবিত্র না হলে কেউ
বিশ্বাসী হতে পারে না। তাই যাদের জ্ঞান দ্বারা বাসনা- লোভ- ক্রোধকে ছেদন করার
শক্তি হয়নি, তারা যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই আছে। এরা যখন সৎকর্মানুষ্ঠানে যোগ দেয়
তখন দেখে মনে হয় এদের ন্যায় বিশ্বাসী আর দ্বিতীয় নেই, তারপরে বের হয়ে গেলেই নিজের
রূপ ধারণ করে। তারা কি আল্লাহ্র নিকট নিজের চরিত্র গোপন করে রাখতে পারবে? তিনি তো
সকলের গোপন রহস্য বিশেষভাবে অবহিত।
৬২) আর তাদের অনেককেই তুমি পাবে, সীমালংঘনে
ও অবৈধ ভক্ষণে তৎপর দেখবে, তারা যা করে নিশ্চয় তা নিকৃষ্ট।
মর্মার্থঃ—এই সব লোকেরা অধিকাংশই
সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত ও অবৈধ ভক্ষণে তৎপর। এরা যতরকম অবৈধ নিকৃষ্ট খাদ্য
গ্রহণ করে এবং অবৈধ কাজ –কারবারে নিযুক্ত থেকে সময় অতিবাহিত করে।
৬৩) সুধিগণ ও পণ্ডিতগণ কেন তাদেরকে পাপ কথা
বলতে ও অবৈধ ভক্ষণে নিষেধ করে না? এরা যা করে নিশ্চয় তা নিকৃষ্ট।
মর্মার্থঃ—জ্ঞানী গুণী লোকদের অবশ্যই একটা
আলোকিত সাংগঠনিক রূপ থাকা উচিত। তারাই মানুষকে মিথ্যা ও পাপ কথা বলতে যেমন নিষেধ
করবে, তেমনি অবৈধ খাবার যা ক্ষতিকারক তা খেতে সকলকে নিষেধ করবে। পবিত্র কথা,
পবিত্র খাদ্য, পবিত্র পরিবেশের সাথে সম্পর্ক রেখে, পবিত্র জীবন গড়ে তোলার
জন্য সকলকে এই জ্ঞানী সমাজ উপদেশ দিবে।
৬৪) ইহুদীগণ বলে, আল্লাহ্ ব্যয়কুণ্ঠ এবং
তারা যা বলে তার জন্যে তারা অভিশপ্ত। বরং আল্লাহ্র উভয় হস্তই মুক্ত, যেভাবে ইচ্ছা
তিনি দান করেন। তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা তাদের
অনেকের ধর্মদ্রোহিতা ও অবিশ্বাসই বৃদ্ধি করবে। তাদের মধ্যে আমি কিয়ামত ( শেষ
বিচারের দিন) পর্যন্ত স্থায়ী শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চার করেছি। যতবার তারা যুদ্ধের
আগুন প্রজ্বলিত করে ততবার আল্লাহ্ তা নির্বাপিত করেন এবং তারা পৃথিবীতে
ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায়, বস্তুত আল্লাহ্ ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্তদের ভালবাসেন না।
মর্মার্থঃ—আল্লাহ্ উদার, দানশীল ও
অভাবমুক্ত, তিনি ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্তদের ভালবাসেন না, সেই সাথে সংকীর্ণমনাদেরও
তিনি অভিভাবকত্ব করেন না।
৬৫)
আসমানী গ্রন্থধারীগণ যদি বিশ্বাস করত ও ভয় করত তাহলে তাদের দোষ অপনোদন করতাম এবং
তাদের সুখদায়ক উদ্যানে প্রবেশদান করতাম।
মর্মার্থঃ—যারা আসমানী গ্রন্থ বা
ধর্মগ্রন্থের আশ্রয়ে রয়েছে, তারা যদি বিশ্বাসী হয়ে নিজের অন্তর্জগৎ ও বহির্জগৎ সেই
গ্রন্থের জ্ঞান দ্বারা শাসন করে নিয়ন্ত্রণে রাখে, তবে তাদের সব দোষ কেটে যাবে ও
তারা মুক্ত পুরুষ হয়ে উঠবে। আল্লাহ্
অবশ্যই তাদের বন্ধু হয়ে তাদেরকে সুখদায়ক উদ্যানে নিয়ে যাবেন, এতে কোন সন্দেহ নেই।
জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও পবিত্র কুরআনের আলোর
জয়।
No comments:
Post a Comment