জয় বিশ্বমানব শিক্ষায় পবিত্র কুরআনের আলো। [ সুরা—৪ নিসা—১৪১ থেকে ১৪৫
আয়াত।]
১৪১)
যারা তোমাদের অমঙ্গলের প্রতীক্ষায় থাকে তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহে তোমাদের জয়
হলে বলে, ‘ আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলাম না’। এবং ভাগ্য যদি অবিশ্বাসীদের অনুকুলে
হয়, তারা বলে, আমরা কি তোমাদের বিরুদ্ধে জয়ী ছিলাম। এবং আমরা কি তোমাদেরকে
বিশ্বাসীদের হাত হতে রক্ষা করিনি? আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন ( শেষ বিচারের দিন)
তোমাদের মধ্যে বিচার মীমাংসা করবেন এবং আল্লাহ্ কখনই বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে
অবিশ্বাসীদের জন্য কোন পথ রাখবেন না।
মর্মার্থঃ—মানব সমাজে চিরকাল এক শ্রেণির মানুষ সুযোগ সন্ধানী হয়ে বিচরণ
করে। যখন যেদিকে পাল্লাভারী সেদিকে গিয়ে নিজের জায়গা ঠিক করে নিতে যত রকমের মিষ্টি
কথা বলে মন জয় করার ব্যবস্থা করে। আল্লাহ্র চোখকে ফাঁকি দিতে কেউ পারবে না।
মীমাংসার দিন তিনি সবার বিচার সঠিকভাবেই করবেন।
১৪২) মুনাফিকগণ (কপটগণ) আল্লাহ্কে প্রতারিত করতে চায়, বস্তুত তিনিই তাদের
প্রতারিত করে থাকেন এবং যখন তারা নামাযে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সাথে কেবল লোক
দেখানোর জন্য দাঁড়ায়, এবং আল্লাহ্কে তারা অল্পই স্মরণ করে।
মর্মার্থঃ—লোক দেখানোর জন্য যারা নামাযে দাঁড়ায় তারা তো আল্লাহ্কে
প্রতারিত করতে গিয়ে নিজেরাই আল্লাহ্র নিকট হতে প্রতারিত হয়। কপট চরিত্রের লোকেরা
কি কখনো আল্লাহ্র নিকট থেকে নামায আদায়( জ্ঞান লাভ) করতে পারবে?
১৪৩) দোটানায় দোদুল্যমান, না এদিকে না ওদিকে! এবং আল্লাহ্ যাকে পথভ্রষ্ট
করেন তুমি তার জন্য কখনও কোন পথ পাবে না।
মর্মার্থঃ—যাদের মনের পবিত্রতা ও একাগ্রতা নেই তাদের চিত্ত অস্থির। এরা কোন
সৎ কাজ স্থিরভাবে করতে সক্ষম নয়। এদের অন্তরে বিশ্বাস খুব কম। তাই এরা পথভ্রষ্ট।
এদেরকে আল্লাহ্ পথভ্রষ্ট করে রেখেছেন, তাই কে এদেরকে পথ দেখাবে?
১৪৪) হে বিশ্বাসীগণ! বিশ্বাসীদের পরিবর্তে অবিশ্বাসীদের বন্ধুরূপে গ্রহণ
করো না। তোমরা কি আল্লাহ্কে তোমাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ নিতে চাও?
মর্মার্থঃ—নিজে বিশ্বাসী না হলে তুমি কাউকে বিশ্বাসীরূপে দেখতেই পাবে না।
আর যদি নিজে বিশ্বাসী হও তবে একজনকেও অবিশ্বাসীরূপে খুঁজে পাবে না। তাই প্রথমে
নিজেকে সর্বতোভাবে বিশ্বাসীরূপে গড়ে তুলতে হয় আল্লাহ্র আশ্রয়ে থেকে। নিজ অন্তরের
বন্ধু আল্লাহ্কে ছেড়ে পার্থিব জগতের মোহে ডুবে বন্ধু করতে গেলেই অবিশ্বাসীদের
ভিড়ে কোথায় হারিয়ে যাবে আর তখন নিজেকে খুঁজে পাবে না আলোর জগতে।
১৪৫) মুনাফিকগণ (কপটগণ) তো জাহান্নামের নিম্নতর স্তরে থাকবে এবং তাদের জন্য
তুমি কখনও কোন সাহায্যকারী পাবে না।
মর্মার্থঃ—কপটতার আশ্রয় নিয়ে কেউ সত্যজ্ঞান লাভ করতে পারে না। সত্যজ্ঞান
লাভ না করা পর্যন্ত কেউ নিজেকে খুঁজে পায় না আল্লাহ্র বিশাল সম্পদের রাজত্বে।
সকলেই ডুবে থাকে নাম- ধাম- সম্পদের আবর্জনার স্তূপে। এই আবর্জনার স্তূপ হচ্ছে
জাহান্নামের নিম্নতর স্তর। কে এখান থেকে হাত ধরে তুলে উদ্ধার করবে?
জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও পবিত্র কুরআনের আলোর জয়।
No comments:
Post a Comment