Monday, 23 July 2018

কুরআন সুরা -৩ আলে ইমরাম -- ২১ থেকে ২৫ আয়াত

      বিশ্বমানব শিক্ষায় পবিত্র কুরআনের আলো।[ সুরা—৩ আলে ইমরান – ২১ থেকে ২৫ আয়াত।]
   ২১) যারা আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহ অবিশ্বাস করে, নবীগণকে অযথা বধ করে এবং যে সকল লোক ন্যায় সঙ্গত আদেশ দেয় তাদেরও বধ করে, তুমি তাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ দাও।
     মর্মার্থঃ—এই আয়াত এক শ্রেণির মানুষের জন্য ভবিষ্যৎ বাণী। এক শ্রেণির মানুষ আল্লাহ্‌র নাম নিবে কুরআন ( ধর্মগ্রন্থ) পড়বে কিন্তু আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহকে অবিশ্বাস করে অযথা নবীগণকে ও জ্ঞানীগুণীজনকে বধ করবে। এরা আল্লাহ্‌ বলতে কাকে বুঝায় সেই জ্ঞান রাখে না এবং তাঁর দেওয়া বিধান ও ধর্মকেও মানে না। এদেরকেই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ্‌ ও ইসলাম শব্দ দুটি তারা কেবল নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করবে এই ইঙ্গিত এখানে দেওয়া হয়েছে
২২) এসব লোকের ইহকাল ও পরকালের কার্যাবলী নিষ্ফল হবে এবং তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।
     মর্মার্থঃ--  আল্লাহ্‌ নামের কলঙ্ক হয়ে যে সব লোক রয়েছে এই পৃথিবীর বুকে তাদের সকলের ইহকাল ও পরকালের কার্যাবলী নিষ্ফল হবে এবং তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না কোনলোকে কোনোকালে। তাই এই আয়াত সাবধানবানী রূপে অবতীর্ণ হয় মানব জাতিকে পবিত্র আত্মায় পরিণত করার জন্যে।
      ২৩) তুমি কি তাদের দেখনি যাদের কিতাবের কিছু অংশ প্রদান করা হয়েছিল? তাদের আল্লাহ্‌র কিতাবের দিকে আহ্বান করা হয়েছিল, যাতে তা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়; অতঃপর তাদের একদল ফিরে দাঁড়ায়, আর তারাই পরাঙ্মুখ।
                                                                                                                                                                                                                                                                               মর্মার্থঃ--- মানুষের মন- বুদ্ধি- চিত্ত বড়ই চঞ্চল, এদের এক সত্যে স্থির করার জন্য সাধনার একান্ত প্রয়োজন। তাই ধর্মগ্রন্থ বা কিতাবের কিছু কিছু অংশের উপদেশ দিয়ে প্রথমে তাদেরকে কিতাব মুখী করতে হয়। ধর্মমুখী হলেই মানুষ ধীরে ধীরে সত্যমুখী হয়ে সম্পূর্ণ ধর্মগ্রন্থের রহস্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়। ধর্মমুখী না হলে কোন মানুষই সত্যমুখী হয়ে সত্যকে গ্রহণ করে তাকে জীবনের সাথে যুক্ত করতে সক্ষম হয় না। সত্যকে জীবনের সাথে যুক্ত করে মানুষকে পবিত্র হতে হয়।
         ২৪) এ জন্য যে তারা বলে, নির্দিষ্ট কিছু দিন ব্যতীত জাহান্নামের আগুন আমাদের স্পর্শ করবে না। তাদের নিজেদের ধর্ম সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন তাদের প্রবঞ্চিত করেছে।
           মর্মার্থঃ—যারা জীবনের সাথে সত্যকে যুক্ত করতে সক্ষম হয় না, তারা জান্নাত ও জাহান্নামের জ্ঞান পাবে কোথা থেকে? অন্ধকারের জীব, আলোর কি রূপ, তা কি কল্পনা করতে পারবে? তাই যাদের স্বরূপ বিজ্ঞানের জ্ঞান নেই তারা ধর্ম সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে নিজেকে যেমন প্রতারিত করে তেমনি অপরকেও প্রতারিত করতে থাকে মুখরোচক কিছু বাণীর দ্বারা।
        ২৫) কিন্তু সে দিন ( শেষ বিচারের দিন), যাতে কোন সন্দেহ নেই, তাদের কী অবস্থা হবে? যে দিন আমি তাদের একত্র করব এবং প্রত্যেককে তার অর্জিত কার্যের প্রতিদান পূর্ণভাবে দেয়া হবে, এবং তাদের প্রতি কোন অন্যায় করা হবে না।
     মর্মার্থঃ—এই পৃথিবী কর্মভূমি ও জ্ঞানপীঠ মানুষের জন্য। এখানে এসে যদি মানুষ নিজের ধর্মানুসারে সৎ কর্ম না করে ও সত্যজ্ঞানের পোশাক না পরিধান করে তবে তো শেষ দিন অর্থাৎ সমাবর্তনের দিন তাকে সেই উৎসবে প্রবেশ করতেই দেওয়া হবে। তাদেরকে সেই দিন পাঠিয়ে দেওয়া হবে বিচার সভায়, সেখানে তাকেই জবাব দিতে হবে বিশাল জীবনের সময় সে কিভাবে অতিবাহিত করেছে, কেন করেছে? কারো প্রতি কোন অন্যায় সেখানে করা হয় না, কেবল অর্জিত কার্যের প্রতিদান দেওয়া হয় সকলকে।
   জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও পবিত্র কুরআনের আলোর জয়।

No comments:

Post a Comment