বিশ্বমানব
শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(৩৫৫) তারিখঃ—২৭/ ০৭/ ২০১৮
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ--[ বেদযজ্ঞ করে মহাভারতের আলো নিয়ে জেগে উঠো এবং
জানো কেন মাতা কুন্তী সকলের মাতা ও নারী জাতির আদর্শ।]
অনেকের ধারণা রাজ কন্যা হয়েও মাতা কুন্তীর চরিত্রে দোষ ছিল।
তিনি অধিক পুরুষের সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন এবং তাদের সান্নিধ্য লাভ করে সন্তান লাভ
করেন। তিনি দুর্বাসা মুনির সেবা করে, তাঁকে সন্তুষ্ট করে,
মন্ত্র সিদ্ধ বর লাভ করেন এবং যখন যে অবস্থায় তিনি দেবতাদের আহ্বান করতেন তাঁরা
আসতে বাধ্য হতেন। কুন্তী সূর্যের বরে কুমারী অবস্থায় কর্ণের ন্যায় বীর
সন্তানের মাতা হউন। এর অর্থ কুন্তী সূর্যের উপাসক হয়ে তাঁর প্রেমে মশগুল হয়ে সেই
প্রেমের সন্তান রূপে কর্ণকে পান। যার তেজ তাঁকে মোহিত করে রাখতো। এই মোহ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার কারণে এবং আরও এগিয়ে যাবার
জন্যে তিনি সূর্যের তেজ স্বরূপ সন্তান কর্ণকে বিসর্জন দেন। এগিয়ে যান ধর্মের দিকে।
প্রকৃতির ধর্মকে জেনে তার প্রেমে মত্ত হয়ে তাঁর নিকট থেকে সন্তান লাভ করেন, যার
নাম যুধিষ্ঠির। যিনি প্রকৃতির বুকে যুদ্ধে বা সংগ্রামে ধীর স্থির। এর পরের ধাপে
তিনি প্রাণবায়ুকে নিজের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করে বায়ু অর্থাৎ পবনের প্রেমে পড়েন। তাঁর
নিকট থেকেও ভীমের ন্যায় বীর সন্তান লাভ করেন।পরের ধাপে দেবরাজ ইন্দ্রের প্রেমে পড়ে
তিনি অর্জুনকে সন্তান রূপে পান। এর পরে তিনি সিদ্ধি লাভ করেন প্রেমের মন্ত্রে। তিনি যাকে ডাক দিবেন- যেভাবে- তিনি সেই ভাবেই তাঁকে দেখা দিবেন এবং যা বলবেন তা করতে বাধ্য হবেন। তাই আমরা
মাদ্রীর সন্তান রূপে দেখতে পাই নকুল ও সহদেবকে। মহাভারতের প্রধান প্রধান চরিত্র
সবায় হচ্ছেন ঈশ্বরের প্রেমে ও মনের সন্তান—কেউ রক্ত- বীজের সন্তান নয়। কুন্তী চরিত্রের গভীরে প্রবেশ করলে আমরা
দেখতে পাব, তিনি ছিলেন বেদের যে দুই কাণ্ড
আছে, তার ধারক বাহকের জননী স্বরূপা।
তাই তিনি মহাভারতের বুকে বেদের কর্মকাণ্ড ও জ্ঞানকাণ্ডের সমস্ত শাখা প্রশাখাকে
প্রাণবন্ত করে তুলতে পেরেছিলেন নিজের কর্ম ও জ্ঞানের দ্বারা। যে জ্ঞান ও কর্মের
রূপ আমরা তাঁর মানস পুত্র ও তাঁদের সংসার জীবন নাট্যে দেখতে পাই। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযানের জয়।
No comments:
Post a Comment