[ পবিত্র গীতা পাঠ করে অনেকের জীবন পবিত্র
হয়ে উঠেছে। গীতা সম্পর্কে যাঁদের ভুল ধারণা ছিল নিশ্চয় তা দূর হয়েছে। পুনঃ আমরা
ভক্তিভাবে গীতা পাঠ অবশ্যই করবো। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে গীতা পাঠের সুযোগ সকলেই
পাবেন। যদি কারও মনে কোন প্রশ্ন জাগে অবশ্যই প্রশ্ন করবেন, নিজেকে মহাত্মা
অর্জুনের পদে বসিয়ে। তাহলেই দেখবেন আপনার কাছে গীতা জীবন দর্শন হয়ে উঠবে এবং আপনি
নিজের স্বরূপ তাঁর মধ্যেই দর্পনে যেমন দেখতে পান তেমনভাবেই পরিষ্কার দেখতে পাবেন। আজকে
কেবল প্রথম অধ্যায়ের অর্জ্জুন বিষাদঃ নাম যোগের প্রথম শ্লোকের ব্যাখ্যা দিয়ে
উদ্বোধন করছি পবিত্র গীতা পাঠ। হরি ওঁ তৎ সৎ।]
ধৃতরাষ্ট্র উবাচঃ---- “ ধর্ম্মক্ষেত্রে
কুরুক্ষেত্রে সমবেতা যুযুৎসবঃ।
মামকাঃ পাণ্ডবাশ্চৈব
কিমকুর্ব্বত সঞ্জয়”।। (১)
ধৃতরাষ্ট্র বললেন--- হে সঞ্জয়, ধর্মক্ষেত্র
কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের জন্য সমবেত হয়ে আমার পুত্রগণ ও পাণ্ডবগণ কি করল?
ধৃতরাষ্ট্র ছিলেন এই পৃথিবীর জন্মান্ধ রাজা। তিনি
ছিলেন পুত্র স্নেহে অন্ধ। রাজা হয়েও নিজের পবিবারের হিতের কথা ছাড়া প্রজাদের হিতের
কথা চিন্তা করতেই পারতেন না। আর সঞ্জয় ছিলেন তাঁর মন্ত্রী। বিশ্বব্যাপী ধর্মযুদ্ধ
দেখার জন্য অন্ধরাজা ধৃতরাষ্ট্র ইচ্ছা প্রকাশ করলে, তাঁর ইচ্ছা পূরণের জন্যই
মহামুনি বেদব্যাসের নিকট থেকে তাঁর মন্ত্রী সঞ্জয় দিব্য দেহ- দিব্য দৃষ্টি – দিব্য
জ্ঞান লাভ করেন। ধর্মক্ষেত্র ও কুরুক্ষেত্র হচ্ছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দুই চরণ।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই চরণতলে ধৃতরাষ্ট্রের পুত্রগণ অর্থাৎ কৌরবপক্ষ এবং পাণ্ডুর
পুত্রগণ পাণ্ডবপক্ষ নাম নিয়ে ধর্মযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের
ধর্মক্ষেত্র নামক চরণটি স্বর্গকে বিস্তার করে এবং কুরুক্ষেত্র নামক চরণটি পৃথিবীকে
বিস্তার করে রয়েছে। তাই এই ধর্মযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ সকলেই লাভ করেছিলেন,
সেই সাথে স্বর্গের দেবদেবতারাও এই ধর্মযুদ্ধ দেখার সুযোগ লাভ করেন। স্বর্গ –
মর্ত্য- পাতালের সর্বভুতের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায় এই ধর্মযুদ্ধ দেখার জন্য ও
এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে জীবন সার্থক করে তোলার জন্য। কারণ এই ধর্মযুদ্ধ প্রকৃতির
নিয়মে কদাচিৎ আসে সকলকে মায়ার বন্ধন থেকে মুক্ত করার জন্য। তাই গীতা পাঠ করে গীতার
জ্ঞানলাভ করলে মায়ার বন্ধন থেকে পাপী- তাপী সকলেই ঈশ্বরের কৃপা লাভ করে মুক্ত হতে
পারেন। জয় বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের জয়।
No comments:
Post a Comment