[ গীতা পাঠ মহৎ যজ্ঞ। শিবহীন যজ্ঞ
অকল্যাণকর। ফল—দুঃখ, বিপদ, ধ্বংস—মহতী বিনষ্টি। তেমনি গীতা পাঠের পর গীতা
মাহাত্ম্য পাঠ না করার অর্থ শিবহীন যজ্ঞ করার ন্যায় অকল্যাণকর। কর্ম্মহীন শুদ্ধ
জ্ঞান পবিত্র বস্তু হলেও জীবনক্ষেত্রে তা নিষ্ফল। কর্ম্ম ছাড়া জ্ঞানকে জীবনের
মধ্যে অনুবাদ করার, নিয়োগ করার আর কেহ নেই। তাই গীতা পাঠের পরে যে সিদ্ধি ও বিভূতি
লাভ হয়, তাঁকে জীবন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেই গীতার মাহাত্ম্য প্রতিষ্ঠিত করতে হয়।
গীতার মাহাত্ম্য প্রচারের অর্থই হচ্ছে জীবের শিবে উত্তোরণ। গীতা পাঠ করে জীবাত্মা
শিবাত্মাতে পরিণত হলেই, গীতার অমৃতপান করে জীব তাঁর মাহাত্ম্য উপলব্ধি করতে পারেন।
ভাল- মন্দ, সত্য- মিথ্যার বোধ না জন্মালে, কিভাবে মানুষ মন্দকে ত্যাগ করে ভালকে
গ্রহণ করবে, কিভাবেই বা মিথ্যাকে বাতিল করে সত্যকে গ্রহণ করবে? আমরা আজকে গীতা পাঠ
শেষ করার সাথে সাথে গীতার মাহাত্ম্য পাঠও শেষ করবো। আজ গীতা মাহাত্ম্যের ৭৪ থেকে
৮৪ শ্লোক পাঠ সকলের জন্য প্রদত্ত হলো। হরি ওঁ তৎ সৎ।]
৭৪) যে অভিমান বা
গর্ব্ববশতঃ গীতা নিন্দা করে, সে প্রলয়কাল পর্যন্ত ঘোর নরকে বাস করে থাকে।
৭৫) যে মূঢ়াত্মা
অহংকারবশতঃ গীতার্থ অমান্য করে, সে কল্পক্ষয় পর্য্যন্ত কুম্ভীপাক নরকে পচতে থাকে।
৭৬) যে ব্যক্তি
সমীপে থেকেও কথ্যমান গীতাব্যাখ্যা শ্রবণ না করে সে অনেকবার শূকরযোনি প্রাপ্ত হয়।
৭৭) যে ব্যক্তি
গীতাপুস্তক চুরি করে আনে তার কিছুই সফল হয় না, আর গীতাপাঠও বিফল।
৭৮) যে ব্যক্তি
গীতার্থ শ্রবণ না করে পরমার্থ বিষয়ে যত্নবান হয়, উন্মত্তের বৃথাশ্রমের ন্যায় তার
তাতে কোন ফল লাভ হয় না।
৭৯) গীতা শ্রবণ করে
সুবর্ণ, ভোজ্য ও পট্টবস্ত্র পরমাত্মার প্রীতির জন্য নিবেদন করবে।
৮০) গীতা-
ব্যাখ্যাতে নানা দ্রব্য ও বস্ত্রাদি উপকরণ দ্বারা ভক্তি ও প্রীতিপূর্ব্বক পূজা
করবে, তাতে ভগবান, হরির প্রীতি জন্মিবে।
৮১) সূত বলিলেন—যিনি
শ্রীকৃষ্ণোক্ত এই পুরাতন গীতা- মাহাত্ম্য গীতা পাঠান্তে পাঠ করে থাকেন তিনি যথোক্ত
ফলভাগী হন।
৮২) যিনি গীতাপাঠ
করে গীতা- মাহাত্ম্য পাঠ করেন না, তাঁর গীতাপাঠের কোন ফল হয় না, তাঁর পরিশ্রম
বৃথা।
৮৩) যিনি এই
মাহাত্ম্য সহিত গীতা পাঠ করেন এবং যিনি শ্রদ্ধাপূর্ব্বক উহা শ্রবণ করেন, তাঁরা
উভয়েই পরম গতি প্রাপ্ত হন।
৮৪) অর্থ সহিত গীতা
শ্রবণ করে যিনি মাহাত্ম্য শ্রবণ করেন, জগতে তাঁর পুণ্যফল সর্ব্বসুখাবহ হয়ে থাকে।
ইতি শ্রীবৈষ্ণবীয়তন্ত্রসারোক্ত শ্রীমদ্ভাগবদগীতা-
মাহাত্ম্যম।
[ জয় বেদভগবান
শ্রীকৃষ্ণের জয়। জয় ব্রহ্মবিদ্যা প্রদায়িণী গীতা মাতার জয়।]
No comments:
Post a Comment