বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(১৮)
তারিখঃ- ১৬/ ০৮/ ২০১৭ স্থানঃ—ঘোড়শালা* জঙ্গীপুর* মুর্শিদাবাদ* পশ্চিমবঙ্গ*
ভারতবর্ষ*
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করে আধুনিক
শিক্ষায় শিক্ষিত ছেলে-মেয়েদেরকে বেদের বাণী শুনিয়ে মনুষ্যত্বহারা জীবন থেকে ফিরিয়ে
নিয়ে এসো এবং তাঁদেরকেই বেদের কর্ম্মী বা বিশ্বমানব শিক্ষার রূপে গড়ে তোলো, তবেই
ভারত পুনঃ সমৃদ্ধশালী দেশরূপে গড়ে উঠবে।]
প্রাচীনকালে আচার্য্য- গুরুদেব শিষ্য-
ছাত্রদের বেদের উপদেশ বাক্য বলতেন এবং সেই
উপদেশ বাক্য সবার অন্তরে প্রাণবন্ত করে গেঁথে দিতেন। “ সত্য বলিবে। মিথ্যা বলিবে
না। ধর্মাচরণ করিবে। পিতা-মাতাকে দেবতা জ্ঞান করিবে। আচার্য্যকে ঈশ্বর মনে করিবে।
ক্ষুধার্ত অতিথিকে দেবতার মত যত্ন করিবে। শাস্ত্রপাঠ হইতে বিরত হইবে না। সত্য পথ
হইতে ভ্রষ্ট হইবে না। ভগবানে ভক্তি করিবে। তোমাদের জীবনের এই যেন আদর্শ হয়”। এরূপ
কথা এখনকার দিনে শিক্ষক, গুরু, মাতাপিতা কেউ বলে না। বললেও কেউ শুনে না। কারণ মানব
সমাজের পরিবেশের সাথে সাথে মানুষের মন দুষিত হয়ে গেছে। অধিকাংশ ছাত্র- ছাত্রীর
মনের মধ্যে একটি মাত্র চাহিদা, একটা চাকুরী চাই। চাকুরীতে যদি মনুষ্যত্ব হারাই তবু
চাই। দাসসুলভ মনোবৃত্তির প্রবণতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, আধুনিক শিক্ষায়
শিক্ষিত ছেলে- মেয়েদের মনে। বর্তমানে আমরা মহা বিপদের সম্মুখীন। খণ্ডিত ভারতের
স্বাধীনতা লাভের পর হতে দুর্ভাগ্যবশতঃ আমরা ঊর্ধ্বগামী হতে পারি নি। ক্রমশঃ আমরা
নিম্নগামী হয়েই চলেছি। আমরা মনুষ্যত্বহারা হচ্ছি সর্ব্বক্ষেত্রে এই দেশের মাটিতে।
এটা দেশের জন্য মহা বিপদ- সমুদ্র। বিশাল এই জন- সমুদ্রকে যারা পথ দেখাবার দায়িত্বে
আছেন, তাঁরাও বেদের শিক্ষায় বিশ্বাসহারা হয়ে মনুষ্যত্বহারা বৃত্তি গ্রহণ করেছেন,
নিজের পদকে ধরে রাখার জন্য। লাখো মানুষের মাঝে দু –এক জন এই মহান ভারতকে পুনঃ
কল্যাণপথে উন্নত করে তোলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এঁদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার দ্বারাই একদিন ভারত মহান হয়ে উঠবে—এই আশা সকলের অন্তরে কাজ করছে। কিন্তু ভয়ে কেউ তাঁদের সাথে হাত মিলাতে
যাচ্ছে না, কারণ মানবতাহীন মত্ত হস্তীর সামনে কে যাবে প্রাণ দিতে? ঐ দিশেহারা মত্ত
হস্তীকে সংহত ও সুশৃঙ্খলিত করতেই হবে, নচেৎ আমরা কেউ কল্যাণপথে উন্নত হয়ে উঠতে
সমর্থ হব না। আমরা ক্ষুদ্র কিন্তু আমাদের আদর্শ মহান। আমরা চাই—দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, ঋষি অরবিন্দ, স্বামী বিবেকানন্দ,
নেতাজী সুভাষচন্দ্র, মহাবিপ্লবী সূর্যসেন প্রমুখ ত্যাগী সাধকদের ভারতকে বিশ্বসভায়
সর্ব্বোচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে। এই চাওয়া আমাদের নিশ্চয়ই সার্থক হবে যদি আমরা
পুনঃ জাতীয়জ্ঞান, মানবিক মুল্যবোধ, নৈতিকজ্ঞান ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের আলোতে আলোকিত
হয়ে ‘ভারত’ হয়ে জেগে উঠতে পারি। জেগে উঠার জন্য “ আমাদের ধ্বনি হবে ঋষি বঙ্কিমের ‘
বন্দে মাতরম’। আমাদের সম্ভাষণ হবে ক্ষাত্রবীর্য বীর নেতাজীর ‘ জয় হিন্দ। জয়
বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়। জয় বেদমাতা, বিশ্বমাতা ও ভারতমাতার জয়।
No comments:
Post a Comment