Saturday, 26 August 2017

গীতা বিশ্বরূপ দর্শন যোগ একাদশ অধ্যায় ৫০ থেকে ৫৫ শ্লোক

[ পবিত্র গীতা এক মহা সমুদ্র। রত্নরাজিতে পরিপূর্ণ গীতা- গ্রন্থে যেমন কোনও অবৈজ্ঞানিক কথা নেই, তেমনই নেই কোনও রকম ধর্মীয়, সামাজিক, গোষ্ঠী, সম্প্রদায়, দল, মত গড়ার মতো সংকীর্ণতার প্রশ্রয়। গীতার বহু ভাষ্য হয়েছে, এখনও হচ্ছে। এইটিই গীতার মাধুর্য। যত এর ভাষ্য হচ্ছে ততই তার নব নব রূপ ফুটে উঠছে। আরও বড় কথা হলো, গীতার শিক্ষা কেবল ত্যাগী ধর্ম্মগুরু, তপস্বী, সন্ন্যাসী ও যোগীবাবাদের জন্য নয়, এর শিক্ষা সংসারী, গৃহী, ছাত্র- ছাত্রীদের মধ্যেও প্রসারিত। উপলদ্ধি এবং আচরণ—এই দুটি সম্পর্কেই গীতার আলোকপাত প্রোজ্জ্বল। আর এ-দুটির যোগসূত্র হলো -- ত্যাগ-ভক্তি- প্রেম- বিশ্বাস ও সত্যের ধারার উপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা ভগবানের বিশ্বরূপদর্শনযোগঃ এর ৪৯ টি শ্লোক পাঠ করেছি। এই অধ্যায়ে মোট ৫৫ টি শ্লোক রয়েছে। আজকে ৫০ থেকে ৫৫ পর্যন্ত শ্লোক আমরা অন্তর দিয়ে পাঠ করবো ভক্তি সহকারে।]
৫০) সঞ্জয় বললেন—এই বলে বাসুদেব অর্জ্জুনকে  পুনরায় নিজের স্বরূপ দেখালেন। সৌম্য রূপ ধারণ করে ঐ ভগবান ভীত অর্জ্জুনকে আশ্বস্ত করলেন।
৫১) অর্জ্জুন বললেন—হে জনার্দ্দন, তোমার এই সৌম্য মনুষ্যরূপ দর্শন করে আমি এখন প্রসন্নচিত্ত এ প্রকৃতিস্থ হলাম।
৫২) শ্রীভগবান বললেন—তুমি আমার যে রূপ দেখলে তা সহজে দেখা যায় না। দেবতাগণ পর্যন্ত ঐ রূপ দর্শনের জন্য নিত্য কামনা করেন।
৫৩) তুমি আমার যে রূপ দেখলে, এই বিশ্বরূপ বেদপাঠ, উগ্র তপস্যা, দান বা যাগযজ্ঞ প্রভৃতি কোন কিছু দ্বারাই দর্শন হয় না।
৫৪) হে পরন্তপ অর্জ্জুন, একমাত্র অনন্যা ভক্তি দ্বারাই আমার এই স্বরূপ জ্ঞান লাভ করা যায়, আমার সাক্ষাৎ দর্শন হয় এবং আমার অন্তর ভূমিতে প্রবেশ পূর্ব্বক আমাকে আস্বাদন করা যায়।
৫৫) হে পাণ্ডব, সমস্ত কর্ম্মই আমার অর্থাৎ পরমেশ্বরের, এই বুদ্ধিতে যিনি কর্ম্ম করেন, যিনি আমাকেই পরমগতি বলে মনে করেন, যিনি আমার একান্ত ভক্ত, বিষয় বস্তুর প্রতি যার আসক্তি নাই, অন্য কোন প্রাণীর প্রতি যার শত্রুভাব নাই, তিনিই আমাকে প্রাপ্ত হন।
ইতি বিশ্বরূপদর্শনযোগো নামক একাদশ অধ্যায়। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়।

No comments:

Post a Comment