[ শ্রীগীতা মানবজাতির একমাত্র অবলম্বন
সুস্থভাবে পরমশান্তিতে এই পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকার জন্য। এই পৃথিবীর বুকে
প্রত্যেক মানুষকে কাউকে আশ্রয় করে বা অবলম্বন করে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হয়।
অবলম্বনবিহীন মানুষ পথের ভিখারী হয়ে পড়েন। যারা শ্রীগীতাকে আশ্রয় করে বা অবলম্বন
করে কাল অতিবাহিত করেন, তাঁরা কোনদিন ইহলোকে বা পরলোকে আশ্রয়হীন বা অবলম্বনবিহীন
অবস্থায় থাকেন না। এ জগতের ধন- দৌলত- বাড়ী- ঘর- বাবা- মা- পুত্র- কন্যা- বন্ধু-
বান্ধব- স্বামী- স্ত্রী- নেতা- মন্ত্রীকে যারা একমাত্র অবলম্বন ভাবেন তাঁরা যেকোন
মুহূর্তে, যেকোন স্বার্থে ছেড়ে চলে যেতে পারেন কিন্তু শ্রীভগবানের শ্রীগীতামাকে
যারা একমাত্র অবলম্বন করে আছেন, তাঁরা কোনদিন আশ্রয়হীন হতে পারেন না। শ্রীগীতামাকে
আশ্রয় বা অবলম্বন করে শ্রীভগবান কৃষ্ণ জগৎসংসার পরিচালনা করছেন। সেই অবলম্বন কৃপা
করে তিনি মানবজাতিকে দান করেন। আজ তাঁর বিভূতিযোগের ১০ থেকে ২১ মন্ত্র আমরা
উচ্চারিত করে তাঁকেই অবলম্বন করে জীবন অতিবাহিত করতে শিখবো।]
১০) আমাতে
মনঃপ্রাণ অর্পণ করে যারা আমাকে শ্রদ্ধার সহিত ভজনা করেন সেই ভক্তগণকে আমি এমন
জ্ঞান দেই যার ফলে তাঁরা আমাকে লাভ করেন।
১১) তাঁদের প্রতি
অনুগ্রহ বশতঃ আমি তাঁদের বুদ্ধিবৃত্তিতে অবস্থান করে উজ্জ্বল জ্ঞানপ্রদীপের
সাহায্যে অজ্ঞান- অন্ধকার বিনাশ করি।
১২—১৩) অর্জ্জুন
বললেন—তুমি পরমাত্মা, পরম আশ্রয় এবং পরম পবিত্র। ঋষিগণ সকলে বিশেষতঃ দেবর্ষি নারদ,
অসিত, দেবল, ব্যাস প্রমুখ বলেন যে, তুমি সনাতন পুরুষ, তুমি আদিদেব, তুমি দিব্য,
তুমি জন্মহীন সর্ব্বব্যাপী। তুমি নিজেও আমাকে একথাই বলছো।
১৪) হে কেশব, তুমি আমাকে যা বলছো, তা সমস্ত সত্য মনে করি। হে ভগবান, তোমার
আবির্ভাব কি জন্য, তা দেবতারাও জানেন না, দানবগণও নয়।
১৫) হে পুরুষোত্তম, হে পরমাত্মন, হে বিশ্বজনক, হে সর্ব্বভুতের ঈশ্বর, হে
দেবগণেরও পূজ্য দেবতা, হে জগতের অধীশ্বর তুমি নিজেই আপন প্রভাবে আপনাকে জানো।
১৬) তুমি যে সকল বিভূতি দ্বারা এই পরিদৃশ্যমান লোক সমূদয় ব্যাপ্ত করে আছো,
সেই সকল দিব্য বিভূতি কি প্রকার তা আমাকে সম্পূর্ণভাবে বল।
১৭) হে যোগী, সর্ব্বদা কি প্রকারে চিন্তা করলে আমি তোমাকে জানতে পারবো? হে
ভগবন, কোন কোন বস্তুতে আমি তোমার ধ্যান করবো?
১৮) হে জনার্দ্দন, তুমি পুনরায় নিজের যোগ ও বিভূতির কথা বর্ণনা কর। কারণ,
তোমার অমৃত সমান কথাগুলি শুনে আমার আকাঙ্ক্ষার পরিতৃপ্তি হচ্ছে না।
১৯) শ্রীভগবান বললেন, হে কুরুশ্রেষ্ঠ, আমার দিব্য বিভূতি সমূহের মধ্যে
যেগুলি প্রধান, সেইগুলি তোমাকে বলবো। কারণ, আমার বিভূতির সীমা- পরিসীমা নাই।
২০) হে নিদ্রাজয়ী অর্জ্জুন, আমি সকল প্রাণির হৃদয়ে অবস্থিত আত্মা। আমি সকল
প্রাণির উৎপত্তির কারণ এবং স্থিতির কারণ। সকল বস্তুর লয় আমাতেই হয়ে থাকে।
২১) দ্বাদশ আদিত্যের মধ্যে আমি বিষ্ণু নামক আদিত্য, জ্যোতির্ময় বস্তু সকলের
মধ্যে আমি রশ্মিমান সূর্য্য, মরুদগণের মধ্যে আমি মরীচি এবং নক্ষত্রের মধ্যে আমি
চন্দ্র।
[ জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়। জয় বেদমাতা, বিশ্বমাতা ও ভারতমাতার
জয়। জয় বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের শ্রীশ্রীপবিত্র গীতামাতার জয়।]
No comments:
Post a Comment