বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(১৭)
তারিখঃ- ১৫/ ০৮/ ২০১৭ স্থানঃ- ঘোড়শালা* জঙ্গীপুর* মুর্শিদাবাদ* পশ্চিমবঙ্গ* ভারত*
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ- [ ঋষি অরবিন্দ এবং ঋষি
বঙ্কিম এর ন্যায় বেদযজ্ঞ করেই ভারতমাতৃকার চরণে জীবন উৎসর্গ করতে হবে, তবেই
ভারতবাসী প্রকৃত দেশ স্বাধীনের স্বাদ আস্বাদন করে জীবন ধন্য করতে পারবে।]
দেশপ্রেমের গুরু ছিলেন ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র। পরাধীন
জাতির মুক্তির জন্য তিনি অমোঘ বীর্য সম্পন্ন মন্ত্র ‘বন্দে মাতরম’ সংগীত ভারতবাসীর
সম্মূখে তুলে ধরেন। ঋষি বঙ্কিমের মন্ত্রের
সিদ্ধ- সাধক ঋষি অরবিন্দ। তিনি দেশপ্রেমের মধ্যেই সনাতন ধর্ম্মকে খুঁজে পেয়েছিলেন।
তাঁর বয়স যখন ৭৫ বছর, তখন তাঁরই জন্মদিনে ১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট ভারত স্বাধীন হয়।
তিনি ১৮৭২ সালের ১৫ আগষ্ট কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জন্মেছিলেন মানব জাতির
সামগ্রিক কল্যাণের জন্য। তাঁর জন্মক্ষণ সমস্ত পৃথিবীর পক্ষেই শুভক্ষণ। তিনি ছিলেন
বিশ্ব- মানব –প্রেমিক। তিনি আসুর সম্পদকে পদদলিত করে দৈবী সম্পদের জাজ্জ্বল্যমান
বিগ্রহ হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর উপদেশ ছিল—প্রত্যেক মানুষের মধ্যে দেবতা আছেন। তাঁকে প্রকটিত করে তোলায় মানব
জীবনের লক্ষ্য। এই পরম লক্ষ্য ভুলিয়াই আজ আমরা দুর্দশাগ্রস্ত। দেশের আজ ৭১ তম
স্বাধীনতা দিবস। আমরা এই স্বাধীনতা দিবসে মন্ত্রহীন যন্ত্র মহাদানব হয়ে জেগে
উঠেছি, নিজেদের দেবত্ব শক্তিকে জলাঞ্জলি দিয়ে। যে বাংলার বুকে ঋষি বঙ্কিম ও ঋষি
অরবিন্দের আবির্ভাব, সেই বাংলায় আজ চলছে দক্ষযজ্ঞের অভিনয়। শিবমন্ত্রে দীক্ষা
দেওয়ার দায়িত্ব নিয়ে যারা স্বাধীন দেশের পুরোহিতের আসনে বসে আছেন মানবজাতিকে
দেবত্বের শক্তিতে জাগিয়ে তোলার জন্য, আজ তাঁরাই শিববিহীন যজ্ঞ করার জন্য মানুষকে
আহ্বান করে চলেছেন। স্বামী বিবেকানন্দ এই সব নেতাদের প্রচণ্ড আঘাত করেই বলে চলেছেন—“
হে ভারত! এই পরানুকরণ, পরামুখাপেক্ষী এই দাসসুলভ আচরণ—এই সম্বলে উচ্চাধিকার লাভ
করিবে? এই কাপুরুষতায় তুমি বীরভোগ্যা স্বাধীনতা লাভ করবে?” ঋষি অরবিন্দ স্বামী
বিবেকানন্দের এই মন্ত্র এক বছর ধরে ভারতের মাটিতে যেখানে বক্তব্য রাখতেন, সেখানেই
উচ্চারণ করতেন। তিনি ১৪ বছর বিলাত বাস করে এসেও সামান্যতম বিদেশীদের মন্ত্রে স্বাদ
গ্রহণ করেন নি। তাই তাঁর গায়ে বিদেশীদের কোন গন্ধ ছিল না। তাঁর জীবনটা ছিল
বাসুদেবময়—তিনি কারাবাস কালে ‘কারা কাহিনী’ গ্রন্থে লেখেন—“ আদালতে বিচারককে
দেখিতাম বাসুদেব, অপর পক্ষের উকীলকে দেখিতাম বাসুদেব, আমার পক্ষে চিত্তরঞ্জনকে
দেখিতাম বাসুদেব। বাসুদেব আমাকে আশ্বাস দেন আমিই সব। সকলের বুদ্ধিও আমিই চালাই”। [
জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়। জয় বেদমাতা, ভারতমাতা ও বিশ্বমাতার জয়।]
No comments:
Post a Comment