[ যে গীতার্থ পাঠ করে নাই তাঁর অপেক্ষা অধম
আর কেউ নাই; যে জ্ঞান গীতা- সম্মত নহে তাহা আসুর জ্ঞান;তাহা নিষ্ফল, ধর্ম্মরহিত
এবং বেদবেদান্ত- বহির্ভুত, যেহেতু ধর্ম্মময়ী গীতা সর্ব্বজ্ঞানপ্রদায়িনী। গীতা
সর্ব্বশাস্ত্রের সারভূত ও বিশুদ্ধ; তার তুল্য আর কিছুই নাই।]
আজকের পাঠ সন্ন্যাসযোগঃ অধ্যায়ের ২২ থেকে ২৯ শ্লোক।
২২) হে কৌন্তেয়,
যে সকল ভোগ বাহ্য বিষয়ের সংস্পর্শে জাত সেইগুলি নিশ্চয় দুঃখের কারণ, সেইগুলি আদি-
অন্তবান ও ক্ষণস্থায়ী। পণ্ডিতগণ সেই সকলে আসক্ত হন না।
২৩) যিনি
দেহত্যাগ করার পুর্ব্বেই কাম-ক্রোধের বেগ প্রতিরোধ করতে পারেন, তিনি নিশ্চয়ই
ব্রহ্মবস্তুর সঙ্গে যুক্ত এবং যুক্ত বলেই অক্ষয় সুখে সুখী।
২৪) যার সুখের
সামগ্রী অন্তরে, যার ক্রীড়া অন্তরের দেবতাদের সঙ্গে, যার জীবনপথের আলো অন্তরচারী
দেবতার করুণাপ্রসাদ, সেই যোগী ব্রহ্মভাব প্রাপ্ত হয়ে ব্রহ্মেই নির্ব্বান লাভ করেন।
২৫) যাদের পাপ
ক্ষয় হয়েছে, সংশয় ছিন্ন হয়েছে, যাঁদের চিত্ত আত্মাতে সমাহিত এবং যাঁদের বহিঃপ্রকাশ
সর্ব্বভূতের হিতজনক কর্ম্মে, সেই ঋষিগণ ব্রহ্মনির্ব্বাণ লাভ করেন।
২৬)
কামক্রোধবিমুক্ত, সংযতচিত্ত, আত্মদর্শী যতিগণের ব্রহ্মনির্ব্বাণ তাঁদের চারদিকেই
বর্তমান অথবা সেই আত্মতত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তিদের ইহলোকে জীবদ্দশায় মৃত্যুর পর পরলোকে
ব্রহ্মে লয় হয়ে থাকে।
২৭—২৮) বাহ্য
বিষয় সমূহ মন থেকে বহিষ্কৃত করে চক্ষুদ্বয়কে ভ্রূমধ্যে স্থাপন করে প্রাণ ও অপান
বায়ুর ঊর্ধ্বে ও অধোগতি সমান করে উহাদিগকে নাসিকা মধ্যে রেখে যিনি মন ও বুদ্ধিকে
সংযত করেছেন এবং যার ইচ্ছা ভয় ক্রোধ বিগত হয়েছে, সেই মোক্ষপরায়ণ আত্মসংযমশীল সাধক
সর্ব্বদা মুক্ত।
২৯) মুক্ত
যোগীপুরুষ আমাকে যজ্ঞ ও তপস্যাসমূহের ভোক্তা সর্ব্বলোকের মহেশ্বর ও জগদ্বন্ধু জেনে
পরম শান্তি লাভ করেন। ইতি সন্ন্যাসযোগ নামক পঞ্চম অধ্যায়। [ জয় বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের
জয়।]
No comments:
Post a Comment