বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(৫৭)
তারিখঃ—২৪/ ০৯/ ২০১৭
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করেই বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের অনুগ্রহ লাভ কর,
তবেই অন্তর থেকে সর্ব্বপ্রকার মালিন্য দূরীভূত হবে এবং তাঁকেই অন্তর্যামীরূপে, শাস্ত্ররূপে, আচার্যরূপে ও
মাতৃশক্তিরূপে দেখতে পাবে।]
বেদযজ্ঞ করলেই বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের অনুগ্রহ
শক্তির প্রকাশ- বিকাশ মানব জীবনে ঘটতে থাকে। তাঁর অনুগ্রহ শক্তির প্রকাশ তিনরূপে
পরিলক্ষিত হয়—১) অন্তর্যামীরূপে, ২) শাস্ত্ররূপে ৩) আচার্যরূপে ও ৪)
মাতৃশক্তিরূপে।
১) প্রত্যেক জীবের হৃদয়ে শ্রীকৃষ্ণ অন্তর্যামীরূপে
বিদ্যমান। ইহার পৌরাণিক নাম ক্ষীরোদশায়ী। ক্ষীরোদশায়ী নারায়ণ ব্যষ্টি জীবের
অন্তর্যামীরূপে বাস করেন। ইনিই সাক্ষীরূপে দ্রষ্টারূপে সকল কিছু দেখেন।
কর্মানুসারে ফলভোগ করান ও অনুগ্রহ- শক্তির প্রকাশে জীবের কর্তব্য নির্দেশ করেন
বিবেকের বাণীরূপে। এই অন্তরচারী গুরু সকলের মধ্যেই বিরাজ করেন এবং হৃদয় মন্দিরে
থেকে বুদ্ধি প্রচোদিত করেন।
২) শাস্ত্ররূপে তিনি জীবকে জীবনের চরম পরম
সাধ্য ও সাধন তত্ত্বটি জানিয়ে দেন এবং তিনি ভীতিদ্বারা, নীতিদ্বারা ও প্রীতিদ্বারা
শাস্ত্রজ্ঞ করার কাজে সদায় তৎপর থাকেন।
৩) জীবের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণের অনুগ্রহশক্তির
তৃতীয় প্রকাশ আচার্যরূপে। জীবান্তর্যামী ও শাস্ত্ররূপে যেমন তিনি নিত্যস্থিত,
আচার্যরূপেও তাঁর স্থিতি সেইরূপ নিত্য ও শাশ্বত। এই নিত্যগুরুর অপর নাম
সমষ্টিগুরু। ইনি শ্রীকৃষ্ণের বিলাসমূর্তিরূপে তাঁর পাশেই বিরাজ করেন।
৪) ভগবান শ্রীকৃষ্ণই নারীগণের শ্রী, বাক,
স্মৃতি, মেধা, ধৃতি ও ক্ষমা। তাঁর তেজ দ্বারাই আবার নারীমূর্ত্তি ভয়ংকর রূপে
প্রকাশিত হন। মায়ের গুণ সন্তান- সন্ততি লাভ করে থাকেন। তাই মাতৃ পূজার মাধ্যমেই
পুরুষের পুরুষত্ব বৃদ্ধি পায়, নারীদের মাতৃত্ব গুণের বিকাশ ঘটতে থাকে। সনাতনী মা
দুর্গার পূজা ব্রহ্মসত্তার পূজা। তাই সনাতন ধর্ম্মে নারী ও পুরুষ উভয় সত্তায় সমান
পদমর্যদায় পূজিত হয়ে আসছে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজে মা দুর্গার আরাধনা করে নারীশক্তি
বা মাতৃশক্তিকে মর্যাদা দান করেন। জয়
বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়।
No comments:
Post a Comment