বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(৪৮)
তারিখঃ- ১৫/ ০৯/ ২০১৭
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করবে সবার মঙ্গলের জন্য অহংকার ত্যাগ করে,
অহংকার ত্যাগ না করতে পারলে বহু শাস্ত্রবিদ হয়েও মূর্খ বলেই প্রতিপন্ন হবে ঈশ্বরের
সভায়।]
মাত্র ষোল বছর বয়সে নিমাই পণ্ডিত অধ্যাপনার
কাজ আরম্ভ করেন। এত অল্প বয়সে তাঁর প্রতিভার সবদিক খুলে যায় এবং সেই প্রতিভার কথা
সর্ব্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এর জন্য তাঁর কোন অহংকার ছিল না। এত বড় পণ্ডিত হয়েও
তিনি ছিলেন আমুদে ও ছটপটে প্রকৃতির লোক। সেই সময় গরিব ব্রাহ্মণ শ্রীধর ছিলেন একজন
ভগবদভক্ত মানুষ। তিনি হাটে কলার মোচা, কলার পাতা, খোলা ইত্যাদি বিক্রি করতেন। এসব
জেনেশুনেও নিমাই পণ্ডিত তাঁকে রাগিয়ে উত্যক্ত করতেন। কলার মোচা কিংবা পাতা কিনে
দাম দেব না বলে তাকে খুব রাগাতেন। শ্রীধর পণ্ডিত ছিলেন খুব সাদাসিধে সরল মানুষ এবং
ভগবদভক্ত। নিমাই পণ্ডিত তাঁকে মনে মনে খুবই ভালোবাসতেন। শ্রীধর পণ্ডিতও নিমাইকে
মনে মনে খুব ভালবাসতেন। এই সাদাসিদে নিমাই- এর প্রতিভার কথা নবদ্বীপবাসীর কাছে খুব
একটা গুরুত্ব পেতো না। হঠাৎ একদিন বহুশাস্ত্রে সুপণ্ডিত দিগ্বিজয়ী কেশব কাশ্মীরি
নবদ্বীপে পণ্ডিত সভায় হাজির হন। তাঁর পাণ্ডিত্যের অহংকার নিমাইকে আঘাৎ করে। তিনি
শাস্ত্র নিয়ে কেশব কাশ্মীরির সাথে তর্ক আরম্ভ করেন পণ্ডিতদের সভায়। নিমাই পণ্ডিত
সহজ –সরল ভঙ্গিতে তর্কে তাঁকে পরাস্ত করেন। দিগ্বিজয়ী পণ্ডিত, নিমাই- এর এরূপ
প্রতিভা দেখে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং নদীয়া ছেড়ে চলে যান। তাঁর এই পতনের মূলে
ছিল অহংকার। ঈশ্বর সব সহ্য করতে পারেন কিন্তু কারও অহংকার তিনি পছন্দ করেন না। জয়
বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়।
No comments:
Post a Comment