Sunday, 17 September 2017

বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান ৫০ তাং ১৭/ ০৯/ ২০১৭

বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(৫০) তারিখঃ- ১৭/ ০৯/ ২০১৭
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ ও নাম যজ্ঞের মধ্যে কোন তফাৎ নেই,  প্রভু শ্রীগৌরাঙ্গ নিত্যানন্দ প্রভুকে এই কথা বলে হরিনামের আলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে সকলের অন্ধত্ব মোচন করতে বললেন।]
বেদশাস্ত্রে পণ্ডিত নিমাই বিয়ের কিছুদিন পরে পিতৃশ্রাদ্ধের উদ্দেশ্যে গয়া গেলেন। সেখানে ‘বিষ্ণুপদ’ দর্শন করে তাঁর মধ্যে অভাবনীয় পরিবর্তন দেখা গেল। গয়া থেকে যখন ফিরলেন, তখন ভগবৎপ্রেমে তিনি যেন একেবারে উন্মাদ হয়ে ফিরলেন। তখন তিনি রাস্তায় ছুটে ছুটে সর্ব্বদা হরিনাম সংকীর্তন করতেন। বেদজ্ঞ পণ্ডিত একেবারে সাদাসিদে মাটির মানুষ হয়ে সদায় হরিনামে মশগুল হয়ে থাকেন। ধীরে ধীরে নবদ্বীপে গৌরাঙ্গের প্রেমী ভক্তরা একে একে এসে জড় হতে লাগল। স্বামী নিত্যানন্দ অবধূত, যাকে নিমাই দাদার ন্যায় মান্য করতেন এবং ভক্তগণের মধ্যে যিনি নিতাই নামে সুপরিচিত; তিনিও নবদ্বীপে এসে উপস্থিত হলেন। নিমাই- এর সঙ্গে দেখা হতেই তিনি নিজেকে সমর্পন করে দিলেন আর প্রেমোন্মত্ত হয়ে উভয়ে কীর্তনে রত হলেন।
 শ্রীগৌরাঙ্গ নিত্যানন্দ প্রভুকে হরিনাম প্রচারের জন্য অনুরোধ করলেন এবং তাঁকে বললেন—“ মানুষ হরিনামের প্রভাব জানে না। তাদের কাছে হরিনামের আলো পৌঁছে দাও, তাদের অন্ধত্ব মোচন করো”। এই সময়ে জগাই আর মাধাই নামে দুই মদ্যপ নবদ্বীপবাসীর উপর অকথ্য অচ্যাচার করত। একদিন তারা মদের হাঁড়ি ছুঁড়ে নিত্যানন্দকে আঘাত করল। তাঁর মাথা ফেটে রক্ত গড়াতে লাগল। খবর পেয়ে শ্রীগৌরাঙ্গ সেখানে ছুটে এলেন এবং ওই দুষ্টদের শাস্তি দিতে উদ্যত হলে নিত্যানন্দ প্রভু তাঁকে থামিয়ে দেন এবং অপরাধীদের ক্ষমা করে তাদের উদ্ধারের জন্য গৌরাঙ্গের কাছে প্রার্থনাও জানালেন। তাঁর প্রার্থনা শুনে শ্রীগৌরাঙ্গ জগাই আর মাধাইকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। সেদিন থেকে তারা পাপমুক্ত হয়ে সমস্ত রকম দুষ্কর্ম থেকে বিরত হলো, আর হয়ে উঠলো পরম ভগবদভক্ত। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়।

No comments:

Post a Comment