বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(৫৮)
তারিখঃ- ২৫/ ০৯/ ২০১৭
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে সত্যমুখী হয়ে মাতৃ আরাধনা করো,
তাহলেই সহজে মায়ের আশীর্বাদে রসোল্লাস ইত্যাদি অষ্ট সিদ্ধি লাভ করে মানব জীবন ধন্য
করতে পারবে।]
বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে সত্যমুখী হয়ে মাতৃ
আরাধনা করলেই মানুষের অন্তরে রসের উল্লাস হয়। এই রসোল্লাসের জন্য কোন যোগ- সাধনার
প্রয়োজন হয় না। একেই রসোল্লাস নামক সিদ্ধি বলা হয়। এই সিদ্ধির প্রভাবে মানুষের ক্ষুধা- তৃষ্ণা (কামনা,
বাসনা) নষ্ট হয়ে যায় এবং সদায় সত্যকে আশ্রয় করে মানুষ এক অনাবিল আনন্দের জগতে
বিচরণ করে। এই আনন্দময় অবস্থায় মানুষকে প্রজা স্ত্রী ইত্যাদিকে ভোগ করা ছাড়াই সর্বদা
পরম তৃপ্তির জগতে থাকতে দেখা যায়। মুনিশ্রেষ্ঠগণ একেই ‘তৃপ্তি’ নামক দ্বিতীয়
সিদ্ধি বলেছেন। মাতৃ আরাধনার ফলে মানুষের অন্তরে যে ধর্ম্মবোধ জাগ্রত হয়, সেটাই
হচ্ছে উত্তম ধর্ম। সেটিকেই বলা হয় তৃতীয় সিদ্ধি। এই স্বাভাবিক
প্রকৃতির বা বিশ্বজননীর বিধান বা ধর্ম্মকে মেনে চলার ফলে সমস্ত প্রজার রূপ ও আয়ু
একপ্রকার হয়ে যায়, এই হলো মা দুর্গার দেওয়া চতুর্থ সিদ্ধি। মাতৃ আরাধনার ফলে
মানুষের শক্তি বা বলের ঐকান্তিক আধিক্য বেড়ে যায় —এই শক্তির বিকাশ-ই ‘ বিশোকা’
নামের পঞ্চম সিদ্ধি। মাতৃক্রোড়ে থেকে পরমাত্মপরায়ণ
হয়ে তপ- ধ্যান ইত্যাদিতে তৎপর থাকা হল ষষ্ট সিদ্ধি। মাতৃ আরাধনা করে আত্মিক
স্বাধীনতা লাভ করে, স্বেচ্ছানুসারে বিচরণ
করাকে বলা হয় সপ্তম সিদ্ধি। এই
বিশ্বটাই হলো মাতৃক্রোড়, তাই মায়ের কোলে থেকে যেখানে- সেখানে মনের আনন্দে পড়ে
থাকাকে বলা হয় অষ্টম সিদ্ধি। আমরা কৃত্রিম জীবন ছেড়ে সহজ – সরল স্বাভাবিক জীবন-
যাপনে যত অভ্যস্ত হতে পারবো ততই আমরা মায়ের আশীর্বাদ ধন্য হয়ে সিদ্ধি লাভের পথে
এগিয়ে যাবো, সেই সাথে মায়ের বিভূতি- ঐশ্বর্য ও বৈভবের রাজত্বে বাস করার সুযোগ
পাবো। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়। জয় বিশ্বপিতা ও বিশ্বমাতার জয়। জয় মা
দুর্গা।
No comments:
Post a Comment