বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(৫৬) তারিখঃ- ২৩/ ০৯/ ২০১৭
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ- [
বেদ যজ্ঞ করবে যে কোন দেব- দেবীর মূর্তিকে অবলম্বন করে অজ্ঞান বিদূরিত করার জন্য।]
বেদ
যজ্ঞকারীগণ বাহ্য জগৎ ও বাহ্য জগতের মূর্তির উপাসনাকে উপেক্ষা করেন না। তাঁরা
নির্গুণ ব্রহ্মের কাল্পনিক উপাসনা না করে রসময়, প্রেমময়,প্রকাশময় মূর্তিকে অবলম্বন
করেই বৈদিক ঋষি প্রদর্শিত পথে সাধনা করেই সিদ্ধি লাভ করেন। তাই ভারতের সাধক-
সাধিকাগণ বলেছেন—তোমার যে রূপেতে শ্রদ্ধা আছে তাঁকে নিয়েই সাধনা করতে আরম্ভ করে
দাও। বৃথা তর্ক করতে যেও না। দুর্গা, কালী, লক্ষ্মী, সরস্বতী, রাম, কৃষ্ণ,
ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব যে মূর্তি তোমার ভাল
লাগে সেই মূর্তি অবলম্বন করে সাধনা আরম্ভ কর। দেখবে তোমার হৃদয়ের গ্রন্থি খুলে
যাচ্ছে, অজ্ঞান বিদূরিত হচ্ছে। মূর্তি চিন্ময় হয়ে রসময় হয়ে তোমার অন্তরে প্রেমের
বন্যা ও জ্ঞানের আলো জ্বেলে দিচ্ছে। একটা রূপেতে চিন্ময় বোধ জাগলে সমস্ত বিশ্বই
চিন্ময় বোধ হবে। সনাতন ধর্মের এই অমর সুরে সুর মিলিয়ে ভারতের সাধক- সাধিকাগণ
ঈশ্বরের সাথে ঘর করে চলেছেন এবং তাঁকে বিভিন্নরূপে- বিভিন্নশক্তিতে- বিভিন্নগুণে
দেখে চলেছেন অতি আপন করে। ভারতীয় ঋষিদের পথ ধরে সাধনা করতে গিয়ে অনেকেই ঈশ্বরের
বিশ্বরূপের ছটা দেখে মোহোন্মাদ বা মোহগ্রস্ত
হয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়েন। তখন তাঁরা মূর্তি পূজার বিরুদ্ধে গিয়ে অমানবিক হয়ে
পড়েন। দেবী দুর্গার মূর্ত্তি মানবিক ধর্ম্মের বিকাশের প্রতীক নিয়ে আবির্ভূত হন।
তিনি যে বিশ্বমাতা, এই শিক্ষায় তিনি তাঁর আবির্ভাবের মাধ্যমে দিয়ে চলেছেন। তাই
তাঁর আবির্ভাবে সারা বিশ্বে নেমে আসে শান্তি –সাম্য- ঐক্যের করুণাধারা। ওঁ হ্রীং
দুর্গায়ৈ নমঃ।
No comments:
Post a Comment