[ গীতা এমনি এক
পরম বিদ্যা, যা পাঠ করার সাথে সাথে জীব সন্ত্রাসবাদী মন থেকে মুক্ত হয়ে প্রেমময়
হয়ে উঠে। বিশ্বে শাস্ত্রগ্রন্থের অভাব নেই। সব শাস্ত্রের সার গ্রন্থ হচ্ছে গীতা।
গীতা পাঠ করলেই বিশ্বের সব গ্রন্থপাঠ করা হয়ে যায়। আর অধিক গ্রন্থপাঠ করার কোন
প্রয়োজন হয় না। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের গীতায়
হচ্ছেন পরম গুরু। তাহলে যে বুদ্ধিমান মানুষ গীতাকেই নিজের পরম গুরু জেনে তাঁকেই
আশ্রয় করে থাকেন, তাঁর ন্যায় মহৎ পুরুষ আর কে থাকতে পারেন? আজকে গীতা মাহাত্ম্যের ৩৬
থেকে ৫১ শ্লোক আমরা সকলেই পাঠ করবো ভক্তিসহকারে। হরি ওঁ তৎ সৎ।]
৩৬) সকলের অন্ন
ভোজন এবং সর্ব্বত্র পতিগ্রহ করলেও গীতাপাঠকারীকে সেইকারণজনিত পাপ স্পর্শ করে না।
৩৭) অন্যায়
পূর্ব্বক রত্নপূর্ণা মহী প্রতিগ্রহ করলেও একবার মাত্র গীতাপাঠ দ্বারা সে পাপ হতে
মুক্ত হয়ে স্বচ্ছ স্ফটিকবৎ নির্মল হয়ে যায়।
৩৮—৩৯) যার
অন্তঃকরণ সর্ব্বদা গীতায় অনুরক্ত থাকে, যিনি সাগ্নিক, জ্ঞাপক, ক্রিয়ান্বিত ও
পণ্ডিত, তিনিই দর্শনীয়, ধনবান, যোগী ও জ্ঞানবান, তিনিই যাজ্ঞিক, যাজক ও
সর্ব্ববেদার্থদর্শী।
৪০) যে স্থানে
গীতা পুস্তক থাকে এবং নিত্য গীতাপাঠ হয় তথায় ভূতলের প্রয়াগাদি সমূদয় তীর্থই
বিদ্যমান থাকে।
৪১—৪২) যার গীতাপাঠাদিতে
প্রবৃত্তি হয়, তাঁর জীবিতকালে ও দেহাবসানেও সমস্তদেবতা, ঋষিগণ ও যোগীগণ তাঁর
দেহরক্ষক হন, বালগোপাল কৃষ্ণ, নারদ- ধ্রুবাদি পার্ষদ সহিত অবিলম্বে তাঁর সহায় হয়ে
থাকেন।
৪৩) যে স্থানে
গীতাশাস্ত্রের অধ্যয়ন বা অধ্যাপনা হয় তথায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীরাধিকা সহ আনন্দে
বিরাজ করেন।
৪৪—৪৬) ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলিলেন—হে পার্থ গীতাই আমার হৃদয়, গীতাই আমার
সারসর্ব্বস্ব, গীতাই আমার অত্যুগ্র এবং অব্যয় জ্ঞানস্বরূপ; গীতা আমার উত্তম স্থান,
গীতা আমার পরম পদ গীতা আমার পরম গুহ্য, গীতা আমার উত্তম স্থান, গীতা আমার পরম পদ
গীতা আমার পরম গুহ্য, গীতা আমার পরম গুরু; গীতার আশ্রয়েই আমি থাকি, গীতাই আমার পরম
গৃহ, গীতাজ্ঞান আশ্রয় করেই আমি ত্রিলোক পালন করি।
৪৭) গীতা আমার ব্রহ্মরূপা পরমা বিদ্যা, এতে সংশয় নাই; গীতা অর্দ্ধ-
মাত্রারূপিণী নিত্যা, অনির্ব্বচনীয়পদস্বরূপিণী।
৪৮) হে পাণ্ডব, আমি গীতার গুহ্য নামসমূহ বলছি শোন; ঐ নামসকল কীর্ত্তন করলে
তৎক্ষণাৎ সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয়ে যায়।
৪৯—৫০) গঙ্গা গীতা সাবিত্রী সীতা সত্যা পতিব্রতা ব্রহ্মাবলি ব্রহ্মবিদ্যা
ত্রিসন্ধ্যা মুক্তিগেহিনী অর্দ্ধমাত্রা চিদানন্দা ভবঘ্নী ভ্রান্তিনাশিনী বেদত্রয়ী
পরানন্দা ও তত্ত্বার্থজ্ঞানমঞ্জরী।
৫১) যে ব্যক্তি স্থিরচিত্তে প্রত্যহ এই সকল নাম জপ করেন, তিনি ইহলোকে নিত্য
জ্ঞানসিদ্ধ ও অন্তে পরমপদ প্রাপ্ত হন।
[ জয় বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের জয়। জয় গীতা মাতার জয়।]
No comments:
Post a Comment