Tuesday, 6 February 2018

বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান ১৯২ তাং ০৬/ ০২/ ২০১৮


বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(১৯২) তারিখঃ—০৬/ ০২/ ২০১৮
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ সত্যের উপর ভিত্তি করে সংসার করে যাও তাহলেই জানতে পারবে এই মানব জীবনটাই বেদযজ্ঞ।]
সত্যের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা মানব সমাজের চিত্র আমরা কিছুকাল আগেও এই ভারতভূমিতে দেখেছি। আমাদের মায়েরা কোনদিন স্কুলের মুখ দেখেন নি। বাড়ীতে বসে তাঁদের বাপ-মায়ের কাছে চিঠি লেখা পর্যন্ত আক্ষরিক জ্ঞানটা হয়তো কেউ কেউ পেয়েছিলেন। বিশাল সংসারে বৌ হয়ে এসেছিলেন অল্প বয়েসে। সংসারের সকলকে এমন এক ভালবাসার বন্ধনে বেঁধে রাখতেন কেউ সেই বাঁধন ছিঁড়ে পালাতে পারতেন না। শত অভাবেও তাঁদের কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল না—তাঁদের এই সংসারে লড়াই ছিল আনন্দের লড়াই। সংসারে এ ব্যাপারে কোনদিন কোনরূপ অশান্তি চোখে পড়তো না। ভোর চারটা থেকে রাত্রি নয়টা পর্যন্ত এমন এক শৃঙ্খলা বাড়ীতে বজায় থাকতো তাতে সকলেই সমানভাবে অবসর পেত প্রতিদিন বেদযজ্ঞ করার বা জ্ঞান চর্চা করার। বৈঠক আসরে চলতো রামায়ণ, মহাভারত, গীতা, ভাগবত ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থ পাঠ। প্রতিদিন বাড়ীর মায়েরা ভক্তি সহকারে এই পাঠ শুনতে শুনতে অধিকাংশ মুখস্থ করে ফেলতেনপ্রতিনিয়ত এই সত্য ও উৎসাহ –উদ্যমের কথা শুনতে শুনতে তাঁরা এক অফুরন্ত শক্তি লাভ করতেন মনের মধ্যে। মায়ের বয়সের একটি মেয়েকেও চোখে পড়েনি যার মধ্যে আত্মজ্ঞানের প্রকাশ ঘটেনি। তাঁদের প্রেম- প্রীতি- ভালবাসার মধ্যে এতটুকু খাদ চোখে পড়েনি। যৌথ পরিবারের কর্তার উপর ভক্তি রেখে তাঁরা আলাদা আলাদা সংসার করলেও বিপদ- আপদে, সুখে- দুঃখে, অভাব- অভিযোগে তাঁরা সকলেই ছিলেন এক আত্মা। সত্যের সাধনায় শক্তি কত তা আমাদের মা- বাবাদের দিকে লক্ষ্য করলেই অনুধাবন করা যায়। শিক্ষা মানুষের বৃত্তিগুলির শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। আমাদের মায়েরা যদি আধুনিক শিক্ষার আলো কিছুটা পেতেন তবে তাঁদের শক্তি আরও বৃদ্ধি পেত একথা জোড় গলায় বলা যেতে পারে। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়।

No comments:

Post a Comment