Saturday, 3 February 2018

বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান ১৮৯ তাং ০৩/ ০২/ ২০১৮

বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(১৮৯) তারিখঃ—০৩/ ০২/ ২০১৮
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ মানব দেহে ব্রহ্মাগ্নি ও সূর্যাগ্নি দুই-ই বিরাজ করে, সূর্যাগ্নির আলোতে মানুষ বাইরের জগত এবং ব্রহ্মাগ্নির আলোতে মানুষ অন্তর্জগৎ দেখতে পান।]
মানব জীবন অমৃতের সাগর। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অমৃত স্বরূপ হয়ে মানব দেহে পূর্ণ ব্রহ্মরূপে অধিষ্ঠান করছেন, ব্রহ্মাগ্নি ও সূর্যাগ্নির সহযোগে। তাঁর জাগরণ ঘটাতে গেলে, তাঁকে জানতে গেলে সমস্ত সংস্কার ছিন্ন করে, ধর্মের অনুশাসনের দড়ি আলগা করে জীবন পথে এগিয়ে যেতে হবে। অতি সহজ- সরল নিয়ম নিষ্ঠাকে মেনে চলাটাই হচ্ছে মানব ধর্ম। এমন কোন নিয়ম- নিষ্ঠা এ ধর্মের অধীনে পড়ে না যা নিজের জীবনকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়ে বা অপরের জীবন পথে বাধার সৃষ্টি করবে। ধর্মের অনুশাসন দিয়ে জীবনকে বেঁধে রাখা ভালো কিন্তু এর অনুশাসনের দড়ি কত বিশাল হলে জীবনকে বেঁধে রাখা যায় তা নিরূপণ করতে গিয়ে, মা যশোদা শ্রীকৃষ্ণকে সেই দড়ি দিয়ে বাঁধতে গিয়ে অনুভব করেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের অন্তর ও বাইরের জীবনকে তিনি যত ধর্মের অনুশাসন দিয়ে বাঁধতে চেষ্টা করেছিলেন, ততই বড় দড়ির প্রয়োজন হতে থাকে তাঁকে বাঁধার জন্য। যখন কোনভাবেই শ্রীকৃষ্ণকে বাঁধতে পারলেন না, তখনি তাঁর প্রতি পুত্রের কৃপা হলো। তিনি তখন শিশু পুত্রের মুখের ভিতরে বিশ্ব- ব্রহ্মাণ্ডের সকলকে দেখতে পেলেন অদ্ভুত রূপে। সাথে সাথে অনুভব করলেন যে রূপ তিনি দেখছেন তা তাঁর নিজের বিশ্বরূপনিজের মধ্যেই অনন্তকোটি ব্রহ্মাগ্নির বলয় ও সূর্যাগ্নির বলয় ভেসে বেড়াচ্ছে, তা দেখে তিনি পরম তৃপ্তি লাভ করলেন। তারপর নিজেকে তিনি সমস্ত বন্ধন থেকে মুক্ত করে দিয়ে তাঁকে নিজের মধ্যে তন্ন তন্ন করে খোঁজ করতে লাগলেন। খোঁজ পেয়ে দেখলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্ম- জরা- ব্যাধি- মৃত্যুর অধীন নন। তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে থেকেও সবার অতি নিকটে থাকেন প্রিয় হয়ে। কোন কিছুর দ্বারা তাঁকে বেঁধে রাখা যায় না। সূর্যের আলো ও তেজের দ্বারা মানুষ অনেক কিছু করতে পারে কিন্তু তাঁকে বেঁধে রাখা যেমন সম্ভব নয় তেমনি ব্রহ্মাগ্নির তেজ দ্বারাও মানুষ নিজেদের মঙ্গল সাধনের জন্য অনেক কিছুই করতে সক্ষম কিন্তু তাঁকে কোন নাম- ধাম- ধর্ম- কর্ম দ্বারা বেঁধে রাখা সম্ভব নয়। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়।

No comments:

Post a Comment