বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(১৯৮)
তারিখঃ—১২/ ০২/ ২০১৮ আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ--[ বেদ যজ্ঞ মানব জীবনের জন্ম থেকে মৃত্যু
পর্যন্ত এমন এক শক্তিশালী প্রক্রিয়া যার দ্বারা সকলেই নিরাপদে- শান্তিতে সুস্থভাবে
সমাজে বাস করতে পারে।]
আমরা এই ভারতের মাটিতে যে কাজ করি না কেনো সবই
বৈদিক রীতি- নীতিকে মান্য করে বেদের মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে। মাতৃ গর্ভে যে
শিশুটা আসবে সেটাও বৈদিক মন্ত্রবলে পরিশুদ্ধ করে নেওয়ার পর ভূমিষ্ঠ হয়। দশমাস মাতৃ
গর্ভে থাকাকালীন সেই শিশুকে দেবতারূপে পুজা করা হয় এবং বিভিন্ন স্বাদের অন্ন দিয়ে
তাকে তুষ্ট করা হয়। তারপর শিশু ভূমিষ্ঠ হবার পর তার নামকরণও হয় বৈদিক রীতি- নীতি
মান্য করে তার গুণ ও শক্তির বিচার অনুসারে। তারপর সেই সন্তান কবে থেকে অন্নমুখে
দিবে সেটাও বৈদিক রীতি- নীতি মান্য করে বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করে অন্নপ্রাশন করা
হয়। তারপর শুরু হয় বৈদিক রীতি নীতি মান্য করেই সেই শিশুকে শিক্ষা দেওয়ার জন্যে
হাতেখড়ি অনুষ্ঠান। এই বৈদিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যম দিয়ে তার অন্তরে শ্রদ্ধা-
ভক্তি- প্রেম জাগ্রত হতে থাকে সমাজের সর্বশ্রেণীর মানুষের জন্যে। তারপর সংসার
জীবনে আবদ্ধ হওয়ার জন্যেও যে বিবাহ ব্যবস্থা তা এমন এক শক্তিশালী বৈদিক যজ্ঞ যার
দ্বারা যে স্বামী- স্ত্রী সম্পর্ক গড়ে উঠে তা চিরমধুর সম্পর্ক। শত অভাব অভিযোগেও
এই সম্পর্ক ছিন্ন হয় না। তাদের যে সন্তান সন্ততি জন্ম গ্রহণ করে তারাও বৈদিক
জীবনকে অবলম্বন করে। ফলস্বরূপ এই বেদের সনাতন হিন্দু ধর্মের বিশাল স্রোতে কেউ
হীনমন্যতায় ভুগে না। নারীদের নিরাপত্তা সর্বক্ষেত্রে পূর্ণভাবে সুরক্ষিত থাকে
বৈদিক জীবন যাপনের মাধ্যম দিয়ে। বিবাহ বিচ্ছন্নতা বা তালাক পাবার রোগে কাউকে ভুগতে
হয় না। তাদের ছেলে- মেয়েরা কেউ পথের শিশু অনাথ- এতীম হয়ে ভিক্ষা করে না শত অভাব দারিদ্রতার
মধ্যে থেকেও—এটাই হলো বৈদিক জীবনের চরম
উৎকর্ষতা। ঈশ্বর যার জন্যে যে টুকু বরাদ্দ করেছেন তাতেই সন্তুষ্ট থেকে সত্যের দিকে
এগিয়ে যাওয়ার এই শিক্ষা হিন্দু সমাজে সকলেই তার পিতা-মাতার নিকট থেকে পেয়ে আসছে।
ফলস্বরূপ এই সমাজে চোর- ডাকাত- ধর্ষণকারী- সমাজবিরোধী মানুষ চোখে পড়ে না। আজ এই
পৃথিবীর বুকে পরিচয়হীন যত পথশিশু- অনাথ- এতিম- চোর- সমাজবিরোধীর সৃষ্টি হয়ে চলেছে
এক শ্রেণির মুখোশধারী ধর্মীয় নেতাদের জন্যে। তারা বেদ যজ্ঞ বা জ্ঞান- কর্মকে
বিশ্বাস করে না। পশুদের ন্যায় মুহূর্তের দৈহিক উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে যে শিশুদের
জন্ম দেয় তাদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কথাও চিন্তা করেনা—তারা চিন্তা করেনা সেই শিশুর মায়ের ভবিষ্যতের কথা।
ফলস্বরূপ দেখা যায় যারা বৈদিক জীবন- যাপনের মাধ্যম দিয়ে সংসার পরিচালনা করেনা যারা, তারা সবায় দুর্বল হয়ে মনোরোগে ভুগছে, নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে। বহু সন্তানের জননী
হয়েও তালাক নিতে হয় যে সমাজে সেই সমাজের সন্তানরা কিভাবে নিজেকে মানুষ রূপে গড়ে
তোলার উৎসাহ পাবে? তাই দেখা যাচ্ছে বেদ যজ্ঞের
মাধ্যমে বৈদিক জীবন গড়ে তোলা সবার জন্যেই মঙ্গলময়। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও
বেদযজ্ঞের জয়। হরি ওঁ তৎ সৎ।
No comments:
Post a Comment