বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ—২৪/ ০৭/ ২০১৭ স্থানঃ—ঘোড়শালা*
মুর্শিদাবাদ* পশ্চিমবঙ্গ*
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করলেই ভগবানের বিশ্ববীজ, বিশ্বরূপ ও
বিশ্বমূর্তি মানুষের অন্তরে জেগে উঠে এবং মানুষ তখন সমস্ত ধর্ম ও সম্প্রদায়ের
ঊর্ধ্বে উঠে সদায় বিশ্ববোধে জাগ্রত থাকেন।]
বেদে ‘বিষ্ণু’ শব্দের অর্থ যজ্ঞ। যিনি
ব্রহ্মাণ্ড বিস্তার করে আছেন এবং সকলের অন্তর্যামী হয়ে সকলকে দেখছেন, সকলের কথা
শুনছেন এবং সকলকে বিশ্বের সৃষ্টি- রহস্য ও ধর্মের সাধনার সাথে যুক্ত করে রেখেছেন
তিনিই বিষ্ণু। ‘বিষ্ণু’ বা যজ্ঞ এই পরতত্ত্বের তিন নাম—ব্রহ্ম, পরমাত্মা ও ভগবান।
জ্ঞানীর দৃষ্টিতে যিনি ব্রহ্ম, যোগীর দৃষ্টিতে তিনি আত্মার অন্তর্যামী পরমাত্মা
এবং ভক্তের দৃষ্টিতে তিনিই ভগবান। সনাতন ধর্মের ভাগবত- গীতা- বেদ- উপনিষদ ইত্যাদি ধর্মীয় শাস্ত্রগ্রন্থের
দৃষ্টিভঙ্গি সাম্প্রদায়িক ভাবের অনেক ঊর্ধ্বে অবস্থান করে। তাই তিনি গীতায়
অর্জ্জুনকে উপলক্ষ্য করে মানবজাতিকে উপদেশ দিয়েছেন—সর্ব ধর্ম ছেড়ে তুমি আমার শরণ
নাও, আমিই তোমাকে সদা সর্বক্ষণ রক্ষা করবো, তুমি আমাকে ছাড়া অন্য চিন্তা কর না,
তাহলেই তোমাকে কোন পাপ স্পর্শ করতে পারবে না। এই পৃথিবীর মানবজাতি নিজেরা নিজেদের
স্বার্থে বিভিন্ন সম্প্রদায় গড়ে তুলেছে, নিজেদের স্বার্থে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক
ধর্ম গড়ে তুলেছে। সনাতন ধর্মে ঈশ্বর এই সকল সাম্প্রদায়িক ধর্মকে স্বীকৃতি দেন নি।
ভক্তের ভগবানের স্বরূপ শ্রীগীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজমুখেই ব্যক্ত করেছেন---“ আমি
সমগ্র জগতের প্রভাব এবং প্রলয়। আমি জগতের পিতা মাতা ধাতা পিতামহ গতি ভর্তা প্রভু
সাক্ষী শরণ ও সুহৃদ। আমি প্রভব প্রলয় স্থান নিধান ও অব্যয় বীজ। আমি ভূতবর্গের আদি,
অন্ত ও মধ্য”। এতেই বুঝা গেল ভগবান শ্রীকৃষ্ণ – শ্রীবিষ্ণুই বিশ্ববীজ, বিশ্বরূপ ও
বিশ্বমূর্তি। আমরা তাঁর অধীনে, তাঁর আশ্রয়ে থেকে সকলেই বিশ্বমানবশিক্ষার কর্মী
মাত্র। জয় বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের জয়।
No comments:
Post a Comment