Sunday, 16 July 2017

বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ-- ১৬/ ০৭/ ২০১৭

বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ—১৬/ ০৭/ ২০১৭ স্থানঃ—ঘোড়শালা* মুর্শিদাবাদ* পঃ বঃ
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করে দিশেহারা, পথভ্রষ্ট মানুষকে মানুষ হওয়ার আহ্বান জানাও, তাহলেই সনাতন ধর্মের ভিত্তি সুদৃঢ় হবে।]
বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। যান্ত্রিক সভ্যতা মানব সমাজকে যন্ত্রের মতই চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। চলার গতি বেড়েছে, কিন্তু লক্ষ্য স্থির নেই। কোথায় চলেছি আমরা জানি না। মানুষ একেবারে দিশেহারা, পথভ্রষ্ট। স্কুল কলেজের সংখ্যাই বাড়ছে—শিক্ষালাভ হচ্ছে না। মানুষ মানুষ হয়ে জন্মায় না। সনাতন ধর্ম প্রতিটি মানুষকে মানুষ হওয়ার পথটিই দেখিয়ে যাচ্ছে। সনাতন ধর্মের ঋষিদের মতে নীতিশিক্ষার মাধ্যমে বাল্যকাল থেকেই জীবনকে সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে হয়। জীবনের অধিক সময় দুর্নীতি ও কুনীতির মধ্যে কাটিয়ে শেষ বয়সে ধর্ম- কর্ম সম্ভব নয়। সনাতন ধর্মের ভিত্তিটাই নৈতিক। নীতিশিক্ষার মাধ্যমে ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রাখতে হয় বৃহত্তর জীবনের জন্য। আহার নিদ্রা নিয়েই মানুষের জীবন নয়। এর বাইরেও একটা জীবন আছে ও লক্ষ্য আছে। জানতে হবে সেটা কী? নইলে ‘ সবার উপরে মানুষ সত্য’ বা মানুষ ঈশ্বরের ‘শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি’ কথাগুলি অর্থহীন হয়ে যায়। পশুর সাথে মানুষের কোন পার্থক্যই থাকে না।
  তাই আমাদের জীবন- সাধনার প্রধান কথাই হচ্ছে মনুষ্যত্ব লাভ করা। আর্য- ঋষিরা বলেছেন—মানুষ হওয়ার জন্য চাই সত্য, শৌচ, সংযম, অহিংসা ও অচৌর্যের সাধনা। হিন্দু ধর্মের মূল ভিতটাই দাঁড়িয়ে আছে এই কয়টি গুণের উপর। মানুষকে সত্যনিষ্ঠ হতে হবে। কথাটির অর্থ ব্যাপক। সত্যাশ্রয়ী না হলে কোন কাজেই সিদ্ধিলাভ হয় না। সত্যরক্ষার্থে রাজা দশরথ জ্যেষ্ঠপুত্র রামচন্দ্রকে বনে দিলেন; হাড়াই পণ্ডিত তাঁর একমাত্র ছেলেকে সন্ন্যাসীর হাতে তুলে দিলেন। এ ধরণের বহু উদাহরণ ভারতের ইতিহাসে পাওয়া যায়।
শুচি পবিত্রতা মানুষের জীবন- সাধনার আরেকটি বিশেষ দিক। কেবল বাইরের শুচিতা অভ্যাস করলেই চলবে না, ভিতরটাকেও শুচি- পবিত্র রাখতে হবে। সৎ চিন্তা ও সৎ কাজের মাধ্যমে ভিতর শুচি হয়। শুচি- শুভ্র মনেই সুন্দরের সাধনা সম্ভব। জয় বেদযজ্ঞের জয়।

No comments:

Post a Comment