[
গীতার জ্ঞান সার্ব্বজনীন, মঙ্গলজনক মানবজীবনে। কর্ম্মের ফল বন্ধন। বন্ধন হবে কার?
যে কর্ত্তা তারই বন্ধন ঘটে। কিন্তু কর্ম্ম করলেই সে কর্ম্মকর্ত্তা হয় না; যার
কর্ত্তৃত্বাভিমান আছে সেই কর্ত্তা। অভিমান থাকলে কর্ম্ম না করলেও কর্ত্তা হবে।
কর্ত্তৃত্বাভিমানহীন ব্যক্তি কর্ম্ম করলেও অকর্ত্তা। ভোগ করলেই ভোক্তা হয় না। ভোগ
না করলেও ভোক্তা হয়, যদি ভোগাভিলাষ থাকে। ভোগাভিলাষবিহীন ব্যক্তি অভোক্তা। যিনি
অকর্ত্তা ও অভোক্তা তিনি নিত্যতৃপ্ত। পরম আনন্দস্বরূপ ভগবৎপ্রাপ্তিতে তিনি সকল
বিষয়ে আকাঙ্ক্ষাহীন। আজকে শ্রীশ্রীগীতার চতুর্থ অধ্যায়ের জ্ঞানযোগের ১৭ থেকে ২২
শ্লোক সকলের পাঠের জন্য প্রদত্ত হল।]
১৭) বিহিত কর্ম্মের যেমন বুঝবার বিষয় আছে
তেমনি বিকর্ম্ম বা অবিহিত কর্ম্মেরও বুঝবার বিষয় আছে। আবার অকর্ম্ম অর্থাৎ
কর্ম্মত্যাগ সম্পর্কেও যথেষ্ট বুঝবার আছে। কারণ কর্ম্মের গতি বোঝা বড়ই কঠিন।
১৮) যিনি কর্ম্মে অকর্ম্ম আর অকর্ম্মে
কর্ম্ম দর্শন করেন সেই ব্যক্তি মনুষ্য মধ্যে বুদ্ধিমান, তিনি যোগী এবং
সর্ব্বকর্ম্মের অনুষ্ঠাতা।
১৯) যার সমস্ত কর্ম্ম কামনাহীন ও
কর্ত্তৃত্বাভিমানবর্জিত, জ্ঞানাগ্নিদ্বারা যাহার কর্ম্ম দগ্ধ হয়েছে, শাস্ত্রজ্ঞগণ
তাঁকেই পণ্ডিত বলে থাকেন।
২০) যিনি কর্ম্মে ও কর্ম্মফলে আসক্তি
পরিত্যাগ করেছেন, যিনি আপনাতেই সর্ব্বদা পরিতৃপ্ত, যিনি কোন প্রয়োজনে অপরের আশ্রয়
গ্রহণ করেন না, তিনি কর্ম্মে প্রবৃত্ত হলেও প্রকৃতপক্ষে কিছুই করেন না।
২১) যিনি নিষ্কাম, যার চিত্ত ও ইন্দ্রিয়
সংযত, যিনি দান- উপহারাদি সর্ব্বপ্রকার উপঢৌকন গ্রহণ থেকে বিরত, তিনি কেবল শরীর
দ্বারা কর্ম্ম করেন এবং কোনপ্রকার পাপভাগী হন না।
২২) যিনি বিনা চেষ্টায় যা পান তাতেই সুখী,
যিনি সুখদুঃখাদিতে অবিচল, যিনি পরশ্রীকাতর নহেন, সিদ্ধি ও অসিদ্ধিতে যার সমজ্ঞান
তিনি কর্ম্ম করেও কর্ম্মেতে লিপ্ত হন না।
[ ‘ গীতা’ এই শব্দ উচ্চারণ করে যে কোন
কর্ম্ম শুরু করলেও সেই কর্ম্মের ফল সাধককে ভোগ করতে হয়। ‘গীতা’ এই শব্দ উচ্চারণ
করে মৃত্যু হলেও সদগতি লাভ হয়। যে ধর্ম্মই অনুষ্ঠান করা হ’ক, তৎকালে গীতা পাঠ করলে
সেই কর্ম্ম নির্দ্দোষ হয়ে সম্পুর্ণ ফলদানে সমর্থ হয়। জয় বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের
শ্রীশ্রীগীতার জয়।]
No comments:
Post a Comment