[ গীতা কোনও মতবিশেষকে কেন্দ্র করে কোন দল
বা সম্প্রদায় গড়ে তোলেন নি। গীতা লোক- সংগ্রহের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এই
লোক –সংগ্রহ অত সহজে হয় না। যারা মানবদেহ পেয়েও মানবত্বের অমৃত আস্বাদন করেন নি,
তাঁদেরকে মনুষ্যত্বের মহিমায় সকল মানবজাতির সঙ্গে একত্ববোধে একত্র করাই হলো
শ্রীগীতার লোক- সংগ্রহ। জনকাদি রাজর্ষিগণের এই লোক- সংগ্রহ ছিল জীবনের একটি প্রধান
কার্য্য। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রীরা যা করছেন তা সম্পূর্ণ গীতার লোক-
সংগ্রহ বিরোধী কাজ। এঁদের এই কাজকে লোক- সংঘট্ট বলা হয়, এই লোক- সংঘট্টের দ্বারা
মানুষকে মিথ্যাচারী- কদাচারী- পাপাচারী পথে নিয়ে যাবার জন্য এবং সত্যের বিরুদ্ধে
লড়াই করার জন্য সমবেত করা হয়। যে কাজ করতে দুর্যোধন সিদ্ধ হস্ত ছিলেন। বর্তমানে
অনেক নেতা- নেত্রীই এই কাজে সিদ্ধ হস্ত। যার যে কাজ তা সুষ্ঠুভাবে সমাধান না করলে
সে স্বধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। আজকে শ্রীশ্রীগীতার তৃতীয় অধ্যায়ের কর্ম্মযোগের ৩১ থেকে ৩৫ শ্লোক সকলের পাঠের জন্য
প্রদত্ত হলো।]
৩১) যে সকল ব্যক্তি শ্রদ্ধাবান ও অসূয়াবিহীন
হয়ে ( আমার উপদেশের মিথ্যা ছিদ্র অনুসন্ধান না করে) আমার অনুমোদিত বিধি নিত্য
অনুষ্ঠান করেন, তাঁরাও কর্ম্মবন্ধন থেকে মুক্ত হন।
৩২) কিন্তু যারা বিদ্বেষগ্রস্ত হয়ে আমার
মতানুসারে কর্ম্ম করে না সেই সকল মূঢ় ব্যক্তিগণকে জ্ঞানভ্রষ্ট বলে জানবে।
৩৩) জ্ঞানবান ব্যক্তিও নিজ স্বভাব অনুযায়ী
কার্য করেন। প্রাণিগণ স্বভাবের অনুবর্তী হয়েই চলে। এ অবস্থায় স্ববলে ইন্দ্রিয়বৃত্তি
নিরোধ করে লাভ কি?
৩৪) সকল প্রকার ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয়েই রাগ
দ্বেষ প্রভৃতি অনুভুতি জড়িয়ে আছে। কদাচ তাদের বশীভূত হওয়া উচিত নয়। কারণ তারা আমার
অনুমোদিত মার্গের পরিপন্থী।
৩৫) শাস্ত্রনির্দিষ্ট বর্ণাশ্রমবিহিত নিজ
ধর্ম্ম কিঞ্চিত দোষদুষ্ট হলেও উত্তমরূপে অনুষ্ঠিত পরধর্ম্ম অপেক্ষা শ্রেয়ঃ।
স্বধর্ম্মে নিধনও কল্যাণকর, কিন্তু পরধর্ম্ম, স্বপ্রকৃতিবিরুদ্ধ বলে বিপদসঙ্কুল।।
[ রাজার কাজ রাজা করবেন, প্রজার কাজ প্রজা
করবেন। প্রত্যেক ব্যক্তির নির্দ্দিষ্ট কর্ম্মের নামই হলো স্বধর্ম্ম। মানব সমাজে
নিজ নিজ গুণ, যোগ্যতা ও পদ অনুসারে যদি কর্ত্তব্য কর্ম্ম না করে তবেই সমাজে
বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। নিজ নিজ পদের মর্যাদা রক্ষা করাই হলো স্বধর্ম্ম রক্ষা করা। জয়
বেদভগবানের শ্রীশ্রীগীতার জয়।
No comments:
Post a Comment