বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ—২৩/
০৭/ ২০১৭ স্থানঃ—ঘোড়শালা* মুর্শিদাবাদ* পশ্চিমবঙ্গ*
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ নিজে একটি
প্রতিষ্ঠান এই কলিযুগে, তিনি নিজে সারা ব্রহ্মাণ্ডজুড়ে একটি অধ্যাত্ম বিপ্লবের
সূচনা করে চলেছেন, যার লক্ষ্য হল মানব নির্মাণ ও মানবজাতিতে দেবত্বের অভিমুখে নিয়ে
যাওয়া।]
বেদযজ্ঞ শুরু
হয়েছে মানব জাতিকে তার স্বরূপ চিনিয়ে দেবার প্রয়োজনে। মানব জাতি জড়জ্ঞান
বুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে উঠায় নিজের দিব্য স্বরূপ হারিয়ে ফেলেছেন। বেদ, রামায়ণ্,
মহাভারত, গীতা, ভাগবত, চণ্ডী – এগুলিও শ্রীভগবানের চিন্ময় বিগ্রহ স্বরূপ রচিত
হয়েছিল মানব নির্মানের তাগিদে ও মানব জাতিকে দেবত্বের অভিমুখে নিয়ে যাবার তাগিদে।
এ যুগের মানুষ এখন সেই সব অমৃতময় সম্পদ ছেড়ে দিয়ে বাইরের জগতের রূপ, রস, গন্ধ,
শব্দ স্পর্শে মত্ত হয়ে চঞ্চল হয়ে উঠেছে। তাই বেদযজ্ঞ সত্তা নিজেই মানব জাতির জন্য
জ্ঞান- প্রেম সূত্রের অখণ্ড আয়োজন করেছেন ভারতাত্মা ও বিশ্বাত্মাতের জাগিয়ে তুলে
ধর্ম্মক্ষেত্রে – কুরুক্ষেত্রে সমবেত করার জন্য। বৌদ্ধযুগ থেকেই মানব জাতি সনাতন
ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে অনেক মহামানব এই পৃথিবীর বুকে
অবতীর্ণ হয়ে মানুষকে স্রষ্টার সনাতন ধারার সাথে যুক্ত করার প্রয়াস চালিয়ে গেছেন
কিন্তু তা করতে গিয়ে মানব জাতি নিজেদের স্বার্থে সনাতন ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
নিজেরা আলাদা আলাদা দল- সম্প্রদায়- জাতিতে বিভিক্ত হয়ে পড়েন। এর ফলে শান্তির
প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে দলে দলে রেষারেষি মারামারি ও খুনোখুনি শুরু হয়, নিজেদের দলকে
অন্য দলের থেকে ভারী করার জন্য। প্রকৃত লোক- সংগ্রহের না লোকশিক্ষার জন্য মানুষকে
সঙ্ঘবদ্ধ করার উদ্দেশ্য মাঠে মারা যায়। বর্তমানে মানুষ বিজ্ঞানের আশীর্বাদে সত্যকে
জানার জ্ঞান লাভ করেছে। এখন মানুষ আর কোন ভৌগলিক সীমার মধ্যে আবদ্ধ নয়, উন্নত মনের
অনেক মানুষ বিশ্ববোধের জ্ঞান দ্বারা মুক্ত হয়ে সব ধর্ম সম্প্রদায়ের উর্ধ্বে উঠে
ঈশ্বরের বিশ্বরূপকে দেখতে শিখেছেন অর্জ্জুনের ন্যায়। নিজেকে বিশ্বমানব শিক্ষার
কর্মী বলতে শিখেছেন, পৃথিবীকে হাতের মুঠুর মধ্যে নিয়ে। তাই এখন উন্নত মনের মানব
জাতি নিজের স্বরূপ উদঘাটন করতে শিখেছেন এবং নিজেকে বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মীরূপে
জেনে সনাতন ধারার সাথে যুক্ত হয়ে বেদযজ্ঞ করে চলেছেন। জয় বেদযজ্ঞের জয়।
No comments:
Post a Comment