বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(১৬২) তারিখঃ—০৭/ ০১/
২০১৮
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করে মা লক্ষ্মী ও
লক্ষ্মীপতি বিষ্ণুর পুজো করেই মানুষকে নিজের সনাতন ধর্মকে রক্ষা করতে হয়, সনাতন
ধর্মই হলো বিশ্বমানবের ও জীব- জড়ের নিত্য ধর্ম।]
বিশ্বমানব নিজ
সনাতন ধর্মের কথা ভুলে গেলেই বিশ্বব্যাপী অধর্মের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সেই জন্যই
যুগে যুগে আবশ্যকতা অনুযায়ী শ্রীবিষ্ণুর অংশ থেকে অবতার আবির্ভুত হন, ধর্মের
গ্লানি থেকে সাধু ব্যক্তিদের মুক্ত করার জন্য। বড় কাজের জন্য বড় এবং ছোট কাজের
জন্য ছোট অবতার জন্মগ্রহণ করেন। সৃষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য বিষ্ণু শক্তি
স্বাভাবিকভাবেই প্রতিনিয়ত ক্রিয়াশীল। কিন্তু বড় রোগ হলে বড় ডাক্তার পাঠাতে হয়। এই
বড় ডাক্তারকে মহান কাজ অনুযায়ী যশ এবং সম্মান দেওয়া হয়। অবতারী মহাপুরুষ হলেন
বিষ্ণুরই প্রতীক এবং তাঁদের পুজো করা আসলে বিষ্ণু শক্তিরই পুজো করা।
লক্ষ্মীপতি
বিষ্ণু সৃষ্টির সুন্দরতা, সম্পন্নতা, সদবুদ্ধি ও সাত্ত্বিকতাকে রক্ষা করেন। মা
লক্ষ্মীর চার হাত সৌন্দর্য, সম্পন্নতা, সদবুদ্ধি ও সাত্ত্বিকতার প্রতীক। সমস্ত
প্রাণী জগতের সম্মিলিত আত্মাই হলেন মা লক্ষ্মী। তিনি শ্রীবিষ্ণুর অর্দ্ধাঙ্গিনী।
পরমাত্মায় বিলীন, সংসারের নিয়ন্ত্রন কর্ত্রী, শ্রীবিষ্ণুর অভিন্ন অংশ। মা লক্ষ্মী
বিশ্বমানবের ইচ্ছাকে পূরণ করেন ও রক্ষা করেন।
বিষ্ণুর বা
পরব্রহ্মের উপাসক সেই-ই, যিনি বিশ্বমানবের ইচ্ছা অনুযায়ী কার্যে নিজের শক্তি
ব্যবহৃত করেন। সমাজের লাভ, সংসারের সেবা, বিশ্বের শ্রীবৃদ্ধি, বিশ্বমানবের সুখ-
শান্তির জন্য পবিত্র অন্তঃকরণে প্রতিটি মুহূর্তে প্রয়াসরত মানুষই হলেন প্রকৃত
বৈষ্ণব বা বিষ্ণুর উপাসক। বিষ্ণুর ইচ্ছাই ওই বৈষ্ণবের ইচ্ছা, বিষ্ণুর কার্যপ্রণালীই
ওই বৈষ্ণব ভক্তের কার্যপ্রণালী। তাঁরা পাপের বিনাশ করে ধর্মকে স্থাপনা করার জন্য
সদায় সচেষ্ট থাকেন। মানুষকে বিষ্ণু রূপে মেনে নিয়ে সদা লোকসংগ্রহ বা লোকশিক্ষার
দ্বারা লোকসেবায় রত থাকেন নিজ শক্তি ও গুণ অনুসারে। আর সেটায় হল তাঁদের প্রকৃত
বিষ্ণু পুজা ও বেদযজ্ঞ। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়।
No comments:
Post a Comment