বিশ্বমানব
শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(১৭১) তারিখঃ—১৬/ ০১/ ২০১৮
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বিশ্বমানব শিক্ষা ও
বেদযজ্ঞ-ই মানুষের একমাত্র মুক্তির উপায়।]
সারা বিশ্বে বিভিন্ন দিকে মানুষের যোগ্যতা,
সম্পন্নতা, পার্থিব সম্পদের প্রতুলতা অনেক বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে, তবুও মানুষ
রোগ-শোক, টেনশন –ডিপ্রেশন, অশান্তি- অসন্তোষ, আস্থাহীনতা ইত্যাদির শিকার হয়ে চলেছে। এর মূল কারণ মানুষ যত
বিজ্ঞানের উন্নতির আলো দেখছে ততই পার্থিব জগতের চাকচিক্যতায় আসক্ত হয়ে মানবজীবনের
সত্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ও লোভী হয়ে উঠছে। এর ফলে মানুষের ভিতরে দুর্বুদ্ধির
বিকাশ দ্রুত ঘটে চলেছে এবং সেই দুর্বুদ্ধি দ্রুত বাইরের জগতে ছড়িয়ে পড়ে মানব
সমাজকে কলুষিত করে তুলছে। এই দুর্বুদ্ধি থেকে দুষ্কর্ম আর দুষ্কর্ম থেকে দুর্গতি –অশান্তি
ক্রমশঃ মানব সমাজে বিস্তার লাভ করছে। তাই আমরা সারা বিশ্বেই দেখতে পাচ্ছি
ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ক্ষেত্র থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক
স্তরেও ভীষণ সমস্যা প্রকট হয়েছে এবং সকলেই অশান্তির আগুনে জ্বলছে। মানুষের এই
দুর্বুদ্ধির স্রোতের উৎস কোথায়? কোথা থেকে আসছে মানুষের অন্তরে এই দুর্বুদ্ধি? এই
ভারতবর্ষ বিশ্বমানবের দেশ, এখান ঋষিগণ ও সত্যদ্রষ্টা মুনিগণ ভালভাবেই জানতেন মানুষ
যদি একবার দুর্বুদ্ধির আশ্রয়ে চলে যায় তবে সে মানব সমাজকে ধ্বংস করে দিবে। আর
কিছুতেই মানুষের হৃদয়- বেদ খুলে সদবুদ্ধির আশ্রয়ে তাকে যেতে দিবে না। বিশ্বমানবের
দেশ থেকে বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদ- যজ্ঞ বন্ধ হয়ে যাবে। মানুষ সঙ্কীর্ণ চেতা হয়ে
স্বার্থপর প্রাণিতে পরিণত হবে। মানুষের ভিতরেই দুর্বুদ্ধি ও সদবুদ্ধি, সুমতি ও
কুমতি দুটিরই বীজ থাকে, সে নিজে সেটা বিকশিত করে। একবার যদি দুর্বুদ্ধির বীজ থেকে
মানুষের অন্তরে বৃক্ষ হয়, তবে সেই বৃক্ষের বীজ থেকে কোটি কোটি বৃক্ষ এই পৃথিবীকে
ছেয়ে ফেলবে। এই পরিস্থিতিতে পৃথিবীর বুকে আর সদবুদ্ধির বৃক্ষ জন্ম নেওয়ার পরিবেশ ও
পরিস্থিতি পাবে না। দুর্বুদ্ধির কবলে পড়ে মানুষ যে শ্রেষ্ঠ প্রাণি সে কথাও ভুলে
যাবে, সেই সাথে ভুলে যাবে তার থেকেও মহান তার সৃষ্টিকর্তা পরমাত্মা- পরমেশ্বর তাঁর
কথা। যদি মানুষ আন্তরিক ভাবে ভক্তিসহকারে পরমাত্মার থেকে সদবুদ্ধির প্রার্থনা করে,
তাহলে অবশ্যই সে তা প্রাপ্ত করে—এটাই ভারতীয় ঋষিদের বাক্য। কিন্তু দুঃখের বিষয়
শিক্ষালয় গুলিতে আজ এই প্রার্থনা বন্ধ করার জন্য কচিকাঁচাদের বাবা- মায়েরাই
আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়।
No comments:
Post a Comment