বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(১৭৪) তাং ১৯/
০১/ ২০১৮
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করে বিবেককে
জাগ্রত করো বিবেকের শক্তিই হলো ব্রাহ্মণ্য পুরোহিতের শক্তি।]
প্রত্যেক
মানুষ প্রকৃতির হাত থেকে বাঁচার জন্য নিজ নিজ বুদ্ধি কাজে লাগায়। সেই সাথে নিজের
বিবেককে জাগ্রত করে প্রতিবেশীর সুখে- দুঃখে পাশে দাঁড়ায়। অর্থাৎ আমরা প্রত্যেক
মানুষের অন্তরের বুদ্ধিতে কম- বেশী ব্রাহ্মন্যশক্তির প্রভাব লক্ষ্য করি। বিবেক
হচ্ছে মানুষের বুদ্ধির ন্যায়শীল, নিরপেক্ষ, সৎগুণী, সহৃদয়, উদার, লোক- কল্যাণকারী
অংশের দিক। মানুষের পক্ষে এই অংশের দিকে বেশী নজর দেওয়া সম্ভব হয় না, কারণ
প্রত্যেক মানুষ একটা না একটা ক্ষেত্রে পরিবেশ ও পরিস্থিতির শিকার হয়ে সংকীর্ণ হয়ে
পড়তে বাধ্য হয় আত্মরক্ষার্থে। তবে মানুষ বিবেককে কল্যাণকারক মনে করে প্রত্যেক
বিষয়কে স্বতন্ত্রভাবে বিচার করে এগিয়ে চলছে বলেই এখনও মানব সমাজে কিছুটা হলেও
ন্যায় বিচার হচ্ছে। অন্ধ অনুকরণ থেকে মানুষকে এখনো এই ব্রাহ্মণ্য পুরোহিতের শক্তি
বিবেক-ই রক্ষা করে চলেছে। ব্রাহ্মণ্য পুরোহিতের শক্তি বিবেক চিরকাল প্রগতিশীল। তাই
ভারতীয় সনাতন শাস্ত্র সর্বদাই প্রগতিশীল হয়ে দেশ, কাল, পরিস্থিতি অনুযায়ী
পরিবর্তিত হতে থাকে। মস্তিষ্ক বলের সম্পর্ক শারীরিক বলের সঙ্গে। আর বিবেক বলের
সম্পর্ক আত্মার সঙ্গে। আধ্যাত্মিক আবশ্যকতা, শুভ ইচ্ছা এবং শুভ প্রেরণার অনুসারে
বিবেক জাগ্রত হয়। উচিত অনুচিতের ভেদাভেদ বিবেকই করে। শারীরিক বল, বুদ্ধি- বল, অর্থ
–বল, লোক –বল, রাজনৈতিক শক্তির বলের অভিমানে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়। তখনি মানুষ
মানুষের অনিষ্ট করে, মানুষের উপর অত্যাচার নিপীড়ন চালায় এবং পাপাচারী- কদাচারী হয়ে
উঠে। এই অবস্থায় সেই সব অভিমানী মানুষের বিবেকশক্তি কাজ করে না, সদায় অন্তরে
দুর্বুদ্ধি জেগে থাকে। চোখ থাকতেও তখন তাঁরা অন্ধ। বিবেক চোখের মতো। সে মানুষকে সৎ
পথ দেখায়। কিন্তু একলা বিবেক ক্রিয়াহীন হয়ে পড়ে। যদি দেহের তিন প্রতিনিধি শূদ্র,
বৈশ্য এবং ক্ষত্রিয় অন্ধ হয়ে হয়েও নিজেদেরকে চক্ষুষ্মান ভাবে এবং পথভ্রষ্ট হয়, তখন
ব্রাহ্মণ্য শক্তি বিবেক ক্রিয়াহীন হয়ে পড়ে প্রকৃতির নিয়মে। তাই আমাদের সকলের
বেদযজ্ঞ করে বলা উচিত—হে পুরোহিত! জাগো! রাষ্ট্রের ব্যাপারে সজাগ থাকো- যাতে আমরা
আবার আমাদের অতীত গৌরবকে দেখতে পাই। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়।
No comments:
Post a Comment