বিশ্বমানব
শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(১৬৭) তারিখঃ—১২/ ০১/ ২০১৮
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ আত্মদর্শন না হওয়া
পর্যন্ত যতই পরিবেশ ও পরিস্থিতির শিকার হও না কেনো বেদযজ্ঞ করা বন্ধ করবে না।]
মানুষ
দৈব ও ভৌতিক তত্ত্বের মিলনে সৃষ্টি, তাই তাকে ত্রিতাপ জ্বালার পরিবেশ ও পরিস্থিতির
শিকার হতেই হয়। তার মন ভৌতিক ও আত্মা দৈবী তত্ত্ব। আত্মা শতগুণী ও অবিনশ্বর।
আত্মাতে তিন গুণ আছে—সৎ, চিৎ ও আনন্দ, যা শ্রেষ্ঠ, শুভ, দিব্য পথে মানুষের
প্রবৃত্তিকে প্রেরিত করে। চিত্ত- চৈতন্য হল জাগ্রত, ক্রিয়াশীল ও গতিবান যা কোনও
অবস্থাতেই ক্রিয়ারহিত হতে পারে না। আনন্দ, প্রসন্নতা, উল্লাস, আশা, তৃপ্তি এর গুণ।
আনন্দ উপলব্ধি করা এর এতই প্রিয় যেমন মাছের জন্য জল। মাছ সবসময়ই জলে থাকতে চায়।
সৎ, চিৎ, আনন্দ যুক্ত আত্মা যতই ঈশ্বরের নিকটতা অনুভব করে ততই সেই মানুষ অধিক
সাত্ত্বিক, ক্রিয়াশীল ও আনন্দমগ্ন হতে থাকে। যোগীগণ ব্রহ্ম প্রাপ্তির জন্য সাধনা
করে। আত্মার প্রেরণা অনুসারে মনের সব ইচ্ছা ও কার্য্যপ্রণালী চালিত করাই এই সাধনার
কার্য্যক্রম। ভৌতিক পদার্থের অস্থির ও হানিকর আকর্ষণ থেকে মুখ ঘুরিয়ে যখন আত্মার
প্রেরণা অনুসারে জীবনচক্র চলতে থাকে, তখন মানুষ সাধারণ না হয়ে, মহান হয়ে ওঠে। এইরূপ
মহাপুরুষের বিচার ও ক্রিয়াকলাপগুলি সাত্ত্বিকতা, চৈতন্যতা ও আনন্দদায়ক স্থিতিতে
পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাঁকে তখন সন্ত, বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ, মহাত্মা, যোগী, তপস্বী,
পরমহংস, সিদ্ধ, আত্মদর্শী, ব্রহ্ম পরায়ণ ব্যক্তি বলা হয়। বেদযজ্ঞ করতে করতে যার
ব্রহ্মভাব ও আত্মবিকাশ, পূর্ণ সাত্ত্বিকতা অবধি বিকশিত হয়ে উঠেছে, তখন বুঝতে হবে
তাঁর ব্রহ্ম- প্রাপ্তি হয়েছে, আত্মদর্শন হয়েছে। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের
জয়।
No comments:
Post a Comment