বিশ্বমানব
শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(১৭৬) তারিখঃ—২১/ ০১/ ২০১৮
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ অতি সুক্ষ
তত্ত্ব, আর যে বস্তু যত সুক্ষ্ম হবে তার বিস্তৃতি তত ব্যাপক হবে।]
পঞ্চভূতের
মধ্যে পৃথিবীর থেকে জল, জলের থেকে বায়ু, বায়ুর থেকে অগ্নি, অগ্নির থেকে আকাশ বেশি সুক্ষ্ম।
তাই আকাশের বিস্তৃতি সর্বাধিক। আকাশ—ইথার তত্ত্ব সব জায়গায় ব্যাপ্ত। বেদভগবান পরমাত্মা- পরমেশ্বরের সুক্ষ্মতা সর্বোপরি তাই তাঁর
ব্যাপকতাও সবচেয়ে বেশি। ব্রহ্মাণ্ডে কণামাত্র স্থান নেই যেখানে ঈশ্বর নেই। তবে
স্থান বিশেষে ঈশ্বরত্বের শক্তি কমবেশি হতে পারে। বিশ্বের সবস্থানের মধ্যে ঈশ্বর
ব্যাপ্ত থাকলেও কেবল ভারতকে দেবভূমি বলা হয় কারণ এখানকার মাটি দিব্যসত্ত্বা দ্বারা
আবৃত হওয়ায় এখানে সত্য, বিবেক, কর্তব্য পালনের আধিক্য বেশী দেখা যায় বেদযজ্ঞের
প্রভাবে। যেমন সব পশুর মধ্যে গরুকে এবং সব জাতের মধ্যে ব্রাহ্মণকে ঈশ্বরের অংশ বলে
প্রাচীনকাল থেকেই মান্য করা হয়, কারণ তাঁদের সত্যনিষ্ঠ এবং উপকারী স্বভাব ঈশ্বর
ভক্তিকে বলপূর্বক নিজের ভিতরে ধারণ করে নেয়। যেখানে সত্য, বিবেকের আচরণ যত বেশী
সেখানে ঈশ্বরের বিশেষ কলা বিদ্যমান থাকে। যেখানে আলস্য, প্রমাদ, পশুতা, অজ্ঞানতা,
অনাচার, কদাচার সেখানে তাঁর উপস্থিতি অনেক কম। বেদযজ্ঞ বা জ্ঞানযজ্ঞে ঈশ্বরের
পূর্ণশক্তি বিরাজ করে অতি সুক্ষ্ম তত্ত্ব নিয়ে। বেদযজ্ঞের সিদ্ধান্ত সর্বদা
স্বাভাবিক এবং মানুষের পক্ষে কল্যাণকর। পরমাত্মার আশ্রয় নিয়ে যারা বেদযজ্ঞ করেন তাঁরাই নিজের সঠিক লক্ষ্যে স্থির থেকে
লোককল্যাণ করে সকলের চোখে
মহৎ হয়ে উঠেন। তাই পরিশেষে বলা যায় পরমাত্মার বিরাট স্বরূপের রহস্য বুঝেই আমাদেরকে
সংসারের নিজেদের জীবনযাত্রাকে সঞ্চালিত করা উচিত। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের
জয়।
No comments:
Post a Comment