Sunday, 17 June 2018

কুরআন আল- বাকারা ১১ থেকে ২০ আয়াত

বিশ্বমানব শিক্ষায় পবিত্র কুরআনের আলো।(সুরা- আল-বাকারা আয়াত ১১থেকে ২০)
১১) তাদেরকে যখন বলা হয়, পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না তারা বলে, আমরাই তো শান্তি স্থাপনকারী। ১২) সাবধান! এরাই অশান্তি সৃষ্টিকারী, কিন্তু এরা তা বুঝতে পারে না। ১৩) যখন তাদেরকে বলা হয়, অপরাপর লোকদের মত তোমরাও বিশ্বাস কর, তারা বলে, নির্বোধরা যেরূপ বিশ্বাস করেছে, আমরাও কি সেরূপ বিশ্বাস করব? সাবধান! এরাই নির্বোধ, কিন্তু এরা বুঝতে পারে না। ১৪) যখন তারা বিশ্বাসীগণের সংস্পর্শে আসে তখন বলে, আমরা বিশ্বাস করেছি, আর যখন তারা নিভৃতে তাদের দলপতিগণের সাথে মিলিত হয় তখন বলে, আমরা তো তোমাদের সাথেই রয়েছি; আমরা শুধু তাদের সাথে ঠাট্টা তামাশা করে থাকি। ১৫) আল্লাহ্‌ তাদের সাথে পরিহাস করেন, আর অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় তাদেরকে ঘুরে বেড়াবার অবকাশ দেন। ১৬) এরাই সৎপথের বিনিময়ে ভ্রান্তপথ ক্রয় করেছে। সুতরাং তাদের ব্যবসা লাভজনক হয়নি; তারা সৎপথেও পরিচালিত নয়। ১৭) তাদের দৃষ্টান্ত, যেমন এক ব্যক্তি আগুন প্রজ্বলিত করল; যখন তা চারদিক আলোকিত করল আল্লাহ তখন তাদের জ্যোতি অপসারিত করলেন এবং তাদেরকে ঘোর অন্ধকারে ফেলে দিলেন, তারা কিছুই দেখতে পায় না। ১৮) তারা বধির, বোবা, অন্ধ; সুতরাং তারা ফিরবে না। ১৯) কিংবা যেমন আকাশের মুষলধারা বৃষ্টি, যাতে রয়েছে ঘোর অন্ধকার, বজ্রধ্বনি ও বিদ্যুৎ চমক। বজ্রধ্বনিতে মৃত্যু ভয়ে তারা কানে আঙুল দেয়। আল্লাহ অবিশ্বাসীদেরকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন। ২০) বিদ্যুৎ চমক তাদের দৃষ্টি শক্তিকে প্রায় কেড়ে নেয়। যখনই বিদ্যুতালোক তাদের সম্মুখে উদ্ভাসিত হয়, তারা তখন পথ চলতে থাকে এবং যখন অন্ধাকারাচ্ছন্ন হয়, তখন তারা থমকে দাঁড়ায়। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি হরণ করতেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
  এখানে মুসলিমদেরকেই উপদেশ দেওয়া হয় পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করিও না। সেক্ষেত্রে তাঁরাই বলেন—আমরাই তো শান্তি স্থাপনকারী। তখন আল্লাহ্‌র বাণী তাঁদেরকে উদ্দ্যেশ্য করে এখানে উচ্চারিত হয়—সাবধান! এরাই অশান্তি সৃষ্টিকারী, কিন্তু এরা তা বুঝতে পারে না। বর্তমানে সারা পৃথিবী জুড়ে মুসলমান জাতিই যে অশান্তিসৃষ্টিকারী তা তাঁরা নিজেরাই প্রমাণিত করে চলেছেন। পৃথিবীতে এমন কোন অন্যায় কাজ নেই যে তাঁরা তাঁদের ধর্মীয় মঞ্চ ব্যবহার করে করছেন না। এখানে এই শ্রেণির মুসলিমদের জন্যে আল্লাহ্‌র বাণী সফল। ১৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে তোমরাও অপরাপর লোকদের মত বিশ্বাস কর, তারা বলে, নির্বোধরা যেরূপ বিশ্বাস করেছে, আমরাও কি সেরূপ বিশ্বাস করবো? অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে তাঁরা প্রথম থেকেই বিশ্বাসঘাতকের ভূমিকা পালন করে আসছেন। এদের উদ্দ্যেশেই আল্লাহর বাণী উচ্চারিত হয়েছে—সাবধান! এরাই নির্বোধ, কিন্তু এরা বুঝতে পারে না। তাহলে যারা বুঝতে পারে না নির্বোধ, তাঁদেরকে নিয়ে কিভাবে একটা আধ্যাত্মিক জগতের সৃষ্টি হতে পারে? তাই ১৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেই দিলেন—এরাই সৎপথের বিনিময়ে ভ্রান্তপথ ক্রয় করেছে। সুতরাং তাদের ব্যবসা লাভজনক হয়নি; তারা সৎপথেও পরিচালিত নয়। তাই এঁরা যখন বিদ্যুতের আলো দেখে তখন পথ চলার শক্তি পান, তারপরে পরেই অন্ধকারে হারিয়ে যান ও থমকে দাঁড়ান। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান, তিনি ইচ্ছা করলে তাঁদের শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি হরণ করতেন, কিন্তু কেনো হরণ করেন নি তা ভাববার বিষয় বুদ্ধিমান লোকদের জন্যে। আল্লাহ্‌ বা ঈশ্বর মানুষকে সহজ- সরল সত্য পথের সন্ধান দেন এবং সেই পথ ধরেই চলতে বলেন। এই সত্য সনাতন ধর্মের পথ চিরন্তন, এই পথ কেউ নতুন করে সৃষ্টি করতে পারেন না। যারা সৃষ্টি করতে যান তাঁরাই সৎপথের বিনিময়ে ভ্রান্তপথ ক্রয় করেন। প্রকৃতির নিয়মে এই সনাতন ধর্মের পথ চলতে থাকে জীব জগৎ ও জড় জগতকে নিয়ে। যারা ঈশ্বরের বিধানকে অমান্য করে নিজের মনগড়া পথকে শ্রেষ্ঠ মনে করবে নিজেকে তাঁর প্রতিনিধি- নবী- অবতার ভেবে তাঁরা সকলেই ভ্রান্ত পথের পথিক ও পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টিকারী জীব। জয় বিশ্বমানব শিক্ষার জয়।

2 comments:

  1. কুরআনের উপদেশ অনুসারে মানুষকে সত্যের মন্দির হয়ে উঠতে হবে। সেই সত্যের মন্দিরে নিজেকে সৎ, সত্য, সুন্দর ও জ্যোতির্ময় আত্মা রূপে দেখতে হবে। এখানে মিথ্যা থেকে মানুষ কিভাবে নিজেকে মুক্ত রাখবে বিশাল কুরআন এর বাণী কেবল সেই জন্যেই উচ্চারিত হয়েছে বিভিন্ন ভাবধারা নিয়ে। যারা মিথার আশ্রয়ে থেকে সত্যের আলো দেখতে চান তাঁদের জন্যে কুরআন অবতীর্ণ হয় নি। সকলকে জানাই অভিনন্দন।

    ReplyDelete
  2. কুরআন হলো জ্ঞান সূর্যের আলো। এই আলোতে স্নান না করলে কেউ পবিত্র হতে পারবে না এবং এর রাজত্বে গিয়ে পূর্ণ বিশ্বাসী হয়ে এর অন্তর্নিহিত অর্থ উপলব্ধি করে জীবনের সাথে সেই আলোকে যুক্ত করে কুরআনের আলোতে আলোকিত হতে সক্ষম হবে না। সকলকে জানাই অভিনন্দন।

    ReplyDelete