বিশ্বমানব শিক্ষা ও
বেদযজ্ঞ অভিযান(৩২৫) তারিখঃ—২৭/
০৬/ ২০১৮
আজকের আলোচ্য
বিষয়ঃ-- [ বেদ যজ্ঞ হলো সবার জন্যে এক মঙ্গলময় উত্তম সহজ সরল সাধন পন্থা, যার
দ্বারা মানুষ নিজের প্রকৃতিকে জয় করে নিজের বীরত্ব ঘোষণা করতে পারে।]
অনন্ত প্রেমের মাঝেই লুকিয়ে আছে মানুষের অসীম
শক্তি। এই রহস্যকে জেনে বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে মানুষকে নিজের হৃদিকাশ, চিদাকাশ, আকাশ,
পরাকাশ, মহাকাশ, সূর্যাকাশ ও পরমাকাশ এই সপ্তাকাশের দুয়ার খুলার জন্যে সাধনা বা
সংগ্রাম করতে হয়। এই দুয়ারগুলি যত একটার পর একটা খুলতে থাকবে তত মানুষ নিজ সহজাত
প্রকৃতিকে জয় করে নিজের মানসিক- বাচিক ও বৌদ্ধিক উন্নতি দেখতে পাবে। তখনি সে বুঝতে
পারবে স্বেচ্ছায় দারিদ্র্য বরণ, মৃত্যু বরণ করার মধ্যে কোন গৌরব নেই। যারা এই
পন্থা অবলম্বন করে তারা পশুর ন্যায় কাপুরুষ ও প্রকৃতির হাতের ক্রীড়নক মাত্র।
প্রকৃত বীর হচ্ছে সেইসব মানুষ যারা নিজের সহজাত প্রকৃতিকে জয় করে সমস্ত ইন্দ্রিয়কে
জ্ঞানের আলোকে উজ্জ্বল করে সদায় মূলের সাথে যুক্ত করে রাখতে সক্ষম। ভিতরে যে সপ্তাকাশের
শক্তি আছে --আবার সেই শক্তিকে পরাভূত করার জন্যে অপশক্তি আছে-- তাকে জেনে ভিতরের
শত্রুকে জয় করতে যে পারবে সেই নিজেকে শ্রেষ্ঠ বীররূপে তুলে ধরতে পারবে। তাই বেদ
যজ্ঞের মাধ্যমেই খোঁজ করতে হবে নিজের অন্তঃপুরে সেই বীর সত্তাকে। নিজের অন্তঃপুরেই
সব রয়েছে, সেই দিকে না তাকিয়ে যত বাইরের জগতের দিকে তাকাবে ততই তোমরা দুর্বল হতে
থাকবে। বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে নিজের অন্তরের দিকে যত দৃষ্টি দিবে ততই তোমার
দিব্যদৃষ্টি বৃদ্ধি হতে দেখবে। সেখানেই দেখবে প্রেমের ভাণ্ডার,পবিত্রতা, মৈত্রী,
সৌহার্দ, জ্ঞান-বিজ্ঞান, ঐক্য- সাম্য- উদারতা বিরাজ করছে। এখান থেকে মানুষের যে
সভ্যতা উঠে আসবে সেই সভ্যতায় মানুষকে সুসভ্য জাতিতে পরিণত করে এবং বিজ্ঞানের সাথে
এই সভ্যতা যুক্ত হয়ে মানুষের সভ্যতাকে নিরাপদ করে তোলে। তাই তোমাদের মধ্যে যে
পূর্ণতা আছে তাকে জাগিয়ে তুলে তার বিকাশ ঘটাও, এই বিকাশ সাধনই হলো তোমাদের শিক্ষা।
তোমাদের ভিতরে যে দেবত্ব আছে তার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনই হোল তোমাদের ধর্ম। শিক্ষা ও
ধর্মের সমন্বয় সাধন করে বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে মানুষ হও ও মানুষ তৈরী করো এটাই মানব
জীবনের সার্থকতা। হরি ওঁ তৎ সৎ।
No comments:
Post a Comment