[ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে অনুরোধ, আপনারা কুরআন উদার মনে পাঠ
করুন, এর সত্য- মিথ্যা বিচার করার শক্তি ঈশ্বর সকল মানুষকে দিয়েছেন, পাঠ করে দেখুন এগুলো মানুষের অন্তরের কথা না
চিরসত্য ঈশ্বর বা আল্লাহ্ কর্তৃক প্রেরিত বাণী?]
বিশ্বমানব শিক্ষায় পবিত্র কুরআনের আলো।
(সুরা- আল-বাকারা, আয়াত ১থেকে ১০ আয়াত)
১) আলিফ
লাম মীম; ২) এটা সেই কিতাব;(কুরআন) এতে কোন সন্দেহ নেই, সাবধানীদের জন্য এ
(গ্রন্থ) পথ নির্দেশক, ৩) যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে, যথাযথভাবে নামাজ কায়েম করে ও
তাদের যা দান করেছি তা হতে ব্যয় করে, ৪) এবং তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে ও তোমার
পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে যারা বিশ্বাস করে ও পরলোকে যারা নিশ্চিত বিশ্বাসী,
৫) তারাই তাদের প্রতিপালকের নির্দেশিত পথে রয়েছে এবং তারাই সফলকাম। ৬) যারা
অবিশ্বাস করেছে তুমি তাদেরকে সতর্ক কর বা না কর তাদের পক্ষে উভয়ই সমান; তারা
বিশ্বাস করবে না। ৭) আল্লাহ তাদের হৃদয় ও কান মোহর করে দিয়েছেন, তাদের চোখের উপর
আবরণ রয়েছে এবং তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। ৮) মানুষের মধ্যে এমন লোক রয়েছে যারা
বলে, আল্লাহ্ ও পরকালে বিশ্বাসী, কিন্তু তারা বিশ্বাসী নয়। ৯) আল্লাহ্ এবং
বিশ্বাসীগণকে তারা প্রতারিত করতে চায়, অথচ তারা যে নিজেদের ভিন্ন কাউকে প্রতারিত
করে না, তা তারা বুঝতে পারে না। ১০) তাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। অতঃপর আল্লাহ্
তাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করেছেন ও তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি, কারণ তারা
মিথ্যাচারী।
সুরা আল- বাকারা শুরু হয়েছে “আলিফ লাম মীম” এই পবিত্র
বাক্য উচ্চারণ করে। এর বাংলায় অর্থ-- পবিত্র আনন্দময় হে সত্তা বা মালিক। কুরআন
কথাটির অর্থ জ্ঞান- আলো বা জ্যোতিঃ। এই জ্ঞান বা জ্যোতিঃকে সাবধানীদের জন্যে
অর্থাৎ শ্রদ্ধাবান লোকদের জন্যে পথ নির্দেশক বলা হয়েছে। যারা অদৃশ্যশক্তিকে
বিশ্বাস করে, সেই অদৃশ্যশক্তিকে আহ্বান করে প্রার্থনার মাধ্যমে, তারাই জীবনে সফল হয় এই বার্তায় এখানে দেওয়া হয়েছে।
তারপর বলা হয়েছে—তাদের যা দান করেছি তা হতে ব্যয় করে, এখানে আল্লাহ্ মানুষকে কি
দান করেছেন—তিনি দান করেছেন পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়, পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয় ও মন, বুদ্ধি, অহংকার যুক্ত এক প্রাণবন্ত মানব দেহ। এই পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়, পঞ্চ
কর্মেন্দ্রিয় ও মন, বুদ্ধি, অহংকার আল্লাহ্র দান সকলের জন্যে, এখানের রয়েছে বিবেকযুক্ত অদৃশ্যজ্ঞানের ভাণ্ডার। এই আট দৃশ্য ও
অদৃশ্যশক্তিকে সৎ পথে কাজে লাগিয়ে ব্যয় করার কথা বলা হয়েছে। পার্থিব জগতের ধন
সম্পদ এই আট শক্তিকে কাজে লাগিয়েই মানুষকে উপার্জন করতে হয়। যারা আল্লাহ্র এই আট
দৃশ্য ও অদৃশ্যশক্তিকে অসৎ পথে ব্যয় করে তারা আল্লাহ্র কুরআন বা জ্যোতিঃর কিছুই
উপলব্ধি করতে পারেন না। কুরআন এর পূর্বে বহু কুরআন বা জ্যোতিঃ অবতীর্ণ হয় মানুষকে
সৎ পথ দেখাবার জন্য। এখানে সমস্ত গ্রন্থই শ্রদ্ধাবান- বিশ্বাসী লোকদের জন্যে পাথেয়
এই কথা দৃঢ়ভাবে বলা হয়েছে। তাই কুরআনের পূর্বে যে সমস্ত গ্রন্থ বা কিতাব আছে সে সব
গ্রন্থকে অবজ্ঞা করলে মানুষ আলো থেকে বঞ্চিত হয়েই থেকে যাবে। যারা শাস্ত্র গ্রন্থ বা আসমানী কিতাবের বাণীকে মান্য করে জীবন পথে চলে না
তাদেরকে যতই জ্ঞানদান করা হৌক বা আলো দেখানো হৌক তারা যে সেই পথে চলবে না তা স্বয়ং
আল্লাহ্ এখানে ব্যক্ত করেছেন। এখানে তিনি স্পষ্ট করে বার্তা দিয়েছেন তাঁর নিকট
থেকে অবতীর্ণ জ্ঞান বা কুরআন পূর্বের হৌক বা পরের হৌক তা যারা বিশ্বাস করে না “
আল্লাহ্ তাদের হৃদয় ও কান মোহর করে দিয়েছেন, তাদের চোখের উপর আবরণ রয়েছে এবং
তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি”। এই মহাশাস্তি কাদের জন্য? মানুষের মধ্যে এমন লোক
রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী, কিন্তু তারা বিশ্বাসী নয়।
বিশ্বাসী লোক হবে সব দিক থেকে উদার- মহান। তারা কখনো নিজের পথ- মতকে বড় বলবে না
এবং অপরের মত- পথ ও ধর্মকে ছোট করবে না। কারণ আল্লাহ্ নামে যে মহাজাগতিক পবিত্র
শক্তি বিশ্বজগতকে ধরে আছেন তাঁকে প্রতারিত ও ছোট করা হবে অন্যকে ছোট করলে। সবায় তো
সেই মহাজাগতিক শক্তির অধীনে রয়েছেন। তাই এখানে কেউ যেমন ছোট নয় তেমনি কেউ বড়ও নয়,
বিশ্বাসীদের কাছে সবায় সমান। যাদের অন্তরে ক্ষুদ্রতার ব্যাধি আছে তারা তো আবদ্ধ
জীব। এদের অন্তরের ব্যাধি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেতেই থাকে, কারণ তারা মিথ্যাচারী ও
সংকীর্ণমনা। মিথ্যাচারী- অনুদার- সংকীর্ণমনা লোক কিভাবে কুরআনের জ্ঞানের জগতে
প্রবেশ করবে অন্ধ-বধির হয়ে? কুরআনে আল্লাহ্ এদেরকেই পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টিকারী
জীব বলেছেন। এরা সদায় সৎ পথের বিনিময়ে ভ্রান্তপথ ক্রয় করতেই ভালবাসে অথচ এরাই
চারদিকে প্রচার করে ও বলে-- আমাদের ধর্ম –মত-
পথই শান্তি স্থাপনকারীর পথ। আপনরা এবার চিন্তা করে বলুন কিভাবে এই অনুদার
সংকীর্ণমনা লোকেরা বিশ্বজগতের প্রতিপালকের আশ্রয়ে থেকে বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী
হয়ে বিশ্বে শান্তি- সাম্য- ঐক্য ও সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে পারে? জয় বিশ্বমানব
শিক্ষার জয়। জয় পবিত্র কুরআনের আলোর জয়।
পবিত্র কুরআন মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ কিন্তু দুঃখের বিষয় তাঁরা কেউ এই পবিত্র ধর্ম গ্রন্থের অন্তর্নিহিত অর্থ উপলব্ধি করতে পারেন না। তাই তাঁরা কুরআন বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থেকে মানব সমাজে অবিশ্বাসী ও বিশ্বাসঘাতক হয়েই চলেছেন। সেই সাথে সারা বিশ্বে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে পড়ছেন। আমি কুরআনের প্রতিটি আয়াতের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা করে সকলকে কুরআনের সত্যতা জানানোর চেষ্টা করছি। আপনারা উদার মন নিয়ে এই পোস্টগুলি পড়লে অবশ্যই সত্যকে জেনে জ্ঞানী হতে পারবেন এবং উদার হয়ে নিজ আত্মার আবদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হতে পারবেন। অভিনন্দন
ReplyDeleteকুরআন হলো জ্ঞান সূর্যের আলো। এই আলোতে স্নান না করলে কেউ পবিত্র হতে পারবে না এবং এর রাজত্বে গিয়ে পূর্ণ বিশ্বাসী হয়ে এর অন্তর্নিহিত অর্থ উপলব্ধি করে জীবনের সাথে সেই আলোকে যুক্ত করে কুরআনের আলোতে আলোকিত হতে সক্ষম হবে না। সকলকে জানাই অভিনন্দন।
ReplyDelete