বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ
অভিযান(৩১৫)তারিখঃ--- ১৭/ ০৬/ ২০১৮ আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—বেদযজ্ঞ করেই উপলব্ধি
করতে হয়, মন ও আত্মা মানব দেহে উজ্জ্বল তারকা স্বরূপ অধিষ্ঠান করে।]
হে মন ও
আত্মা তোমারা পৃথক হয়ে আছো কেন? তোমরা দুজনে এক হয়ে আমার কর্মস্থলে উপবেশন
কর। একই রথে উপবেশন করে তোমাদের পৃথক যেন আমি না দেখি। আমি তোমাদের স্তব রচনা
করছি, তোমরা একত্রে এক হয়ে এসো। তোমরা চন্দ্র সূর্যের ন্যায় সমস্ত খাদ্য দ্রব্যকে
আলোকিত করে বসেছ। একই রথে বসে তোমরা দূতের ন্যায় লোকদের নিকট গমন করছো ও আমাকে যশস্বী করে
তুলছো। আমার এখানে কোন ভূমিকা নেই। তোমরা দু-জনে এক হয়ে কর্ম অনুষ্ঠান পরিচালনা
করছো। যেরূপ পক্ষীর দুটি পক্ষ পরস্পর মিলিত সেরূপ তোমরাও পরস্পর মিলিত। তোমরা
অগ্নির ন্যায় দীপ্তিযুক্ত। সর্বত্রবিহারী হয়ে তোমরা নানা স্থানে সৎকর্ম অনুষ্ঠানে
লিপ্ত। তোমরা অগ্নি ও সূর্যের ন্যায় দীপ্তিশীল, ক্ষিপ্রকারী, উপকারী ও সমস্ত
প্রকার সুখভোগের অনুকুল পরিবেশ রচনাকারী। তোমরাই এই দেহকে হৃষ্টপুষ্ট ও সুশ্রী করে
রেখেছে। তূমি যথার্থদর্শী, বদান্য হৃদয়, ও
অপরের দুঃখে ও নিজের দুঃখে কাতর। তুমি উন্নতশরীর বিশিষ্ট হয়েও আলোকময় আকাশে বাস
কর। তোমরা এমনি নির্মল, যেন জলমধ্যে জন্মেছ ও বলবান ও জয়শীল হয়ে পদ্মের ন্যায়
বিস্তার লাভ করে দেবতার চরণে নিজেকে উৎসর্গ করতে চাইছো। তোমরা মরণশীল দেহকে
পুনর্বার যৌবনাবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য প্রার্থনা করছো। তোমরা শীঘ্রগামী রথ, বায়ুর
ন্যায় উড়ে চলেছো এবং শত্রুকে বশে এনে সর্বদিক থেকে ধন- দৌলত লাভ করে এনে দিচ্ছো।
তোমরাই অতি পরিষ্কার রথের ধারক ও বাহক। তোমরাই দেহ রথে অগ্নি-জল-বায়ুকে স্থির রেখে
রূপ সৃষ্টি করে রূপবান করে তুলছো। তোমরাই শব্দ সৃষ্টি করে মধুর মধুর বাক্য দ্বারা
মধু চক্রে মধুসেচন করে চলেছো আনন্দময় জগতকে ধরে রাখার জন্যে। মধুতুল্য দুগ্ধ সঞ্চার
করে জীব জগতকে রক্ষা করে চলেছো তোমরা।
তোমরা এক রথে আরোহণ করে আমাদের কর্ম অনুষ্ঠানে
উপস্থিত হয়ে মনোরথ পূর্ণ কর। আমরা যেখানেই বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের কর্ম অনুষ্ঠান করি—সেখানেই তোমাদের উভয় শক্তি
এক হয়ে যেন অবস্থান করে। তোমরাই আমাদের এই কর্ম অনুষ্ঠানকে মনোরম ও দীপ্তিময় করে
তুলো জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালিয়ে। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযানের জয়।
No comments:
Post a Comment