[ গীতাই হচ্ছে ভারত—গীতাই হচ্ছে ভারতের জ্ঞানের স্তম্ভ। ভারতবাসী চিরকাল
জ্ঞানধনে ধনী, গীতার ধনের ভাণ্ডারের জন্য। এই ধন ভাণ্ডার থেকে যে যেমন ধন সংগ্রহ
করতে সক্ষম হবে সে তেমনি ধনী- মানী- জ্ঞানী রূপে প্রতিপন্ন হবে ইহলোকে ও পরলোকে।
তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতার মাহাত্ম বলতে গিয়ে বলেছেন-- হে ভারত, চাতুর্ব্বর্ণ
মধ্যে মনুষ্যদেহ ধারণ করে যে ব্যক্তি অমৃতরূপিণী গীতা পাঠ বা শ্রবণ করে না, সে
অমৃত হস্ত থেকে ফেলে দিয়ে বিষ ভক্ষণ করে। সংসার দুঃখার্ত্ত ব্যক্তি গীতাজ্ঞান লাভ
এবং গীতামৃত পান করে ভগবানে ভক্তিলাভ করে সুখী হয়ে থাকেন। জনকাদি রাজগণ গীতা আশ্রয়
করে নিষ্পাপ হয়ে পরম পদ লাভ করেছেন। গীতাপাঠে উচ্চ নীচ ইতর বিশেষ নাই, ব্রহ্ম-
স্বরূপিণী গীতা সমভাবে সকলকেই জ্ঞান দান করে। আজকের সকলের জন্য পাঠ—গুণত্রয়বিভাগযোগঃ
থেকে ২২ থেকে ২৭ শ্লোক বা মন্ত্র জ্ঞান
ধনে ধনী হয়ে উঠার জন্য।
২২) শ্রীভগবান বললেন--- হে অর্জুন,
সত্ত্বগুণের কার্য হল প্রকাশ বা জ্ঞান, রজোগুণের ধর্ম কর্মে প্রবৃত্তি এবং
তমোগুণের ধর্ম মোহ। এই সকল গুণ- ধর্ম প্রবৃত্ত হলেও যিনি দুঃখ –বুদ্ধিতে দ্বেষ
করেন না এবং সুখ- বুদ্ধিতে আকাঙ্ক্ষা করেন না, তিনিই গুণাতীত।
২৩) তিনি উদাসীনের ন্যায় অবস্থান করেন এবং
এই তিন গুণের প্রভাবে বিচলিত হন না। গুণসমূহ নিজ নিজ কার্য্যে বর্ত্তমান আছে, আমার
সহিত ইহাদের কোন সম্পর্ক নাই, ইহা মনে করে যিনি চঞ্চল হন না – তিনিই গুণাতীত।
২৪) যার নিকট সুখ—দুঃখ সমান, যিনি
আত্মস্বরূপে স্থিত, মৃত্তিকা, প্রস্তর ও সুবর্ণ যার নিকট সমান, যিনি প্রিয় ও
অপ্রিয় এবং আপনার নিন্দা ও প্রশংসাকে তুল্য মনে করেন, যিনি ধৈর্য্যশীল—তিনিই
গুণাতীত।
২৫) মান ও অপমান, শত্রুপক্ষ ও মিত্রপক্ষ যার
তুল্য জ্ঞান এবং ফলাকাঙ্ক্ষা করে যিনি কোন কর্মে প্রবৃত্ত হন না, এমন ব্যক্তি
গুণাতীত বলে কথিত হন।
২৬) যিনি আমাকে ঐকান্তিক ভক্তিযোগ সহকারে
আমার সেবা করেন, তিনি এই সকল গুণ অতিক্রম করে ব্রহ্মভাব লাভে সমর্থ হন।
২৭) আমি ব্রহ্মের প্রতিষ্ঠা –স্বরূপ
বাসুদেব। আমি অব্যয় অমৃত- স্বরূপ। আমি শাশ্বত ধর্ম্ম এবং আমিই ঐকান্তিক সুখের
নিদান। ইতি গুণত্রয়বিভাগযোগ নামক চতুর্দশ অধ্যায়।[ জয় বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের জয়।]
No comments:
Post a Comment