Friday, 23 June 2017

বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ-- ২৩/ ০৬/ ২০১৭



বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ—২৩/ ০৬/ ২০১৭ স্থানঃ—পাটিয়া* ভুবনেশ্বর* উড়িষ্যা*
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করেই পুনঃ পুনঃ চেষ্টা ও সাধনা দ্বারা মনঃসংযম করে সমত্ববুদ্ধিতে মনকে স্থিত করতে হবে।]
মন স্বভাবতঃ চঞ্চল ও ইন্দ্রিয়বিক্ষোভকারী। গীতাতেও মহাত্মা অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বলেছেন—বায়ুর বেগকে ঠেকিয়ে রাখা যেরূপ দুঃসাধ্য, মনকে নিরোধ করা তারচেয়েও কঠিনতর কাজ বলে মনে হয়। অর্জুনের কথাটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সম্পূর্ণভাবেই মেনে নিলেন। মন যে চঞ্চল ও দুর্নিরোধ্য এতে কোন সংশয়ই নেই, তথাপি সাধনপথে অগ্রসর হতে গেলে এই দুর্নিবার মনকে বশীভূত করতেই হবে। করবার উপায়ও আছে। উপায় হচ্ছে দুটি--- অভ্যাস এবং বৈরাগ্য, এই দুই উপায়ে মনকে বশে আনতে হবে। কোনও বিষয়ে পুনঃ পুনঃ যত্ন করার নাম অভ্যাস। বহির্ম্মুখী চঞ্চল মনকে অন্তর্মুখী করে আত্মস্থ করতে যে পুনঃ পুনঃ চেষ্টা তাহাই অভ্যাস। মন যে চঞ্চল ইহার মূলেও অভ্যাসের ফল। দীর্ঘকাল অভ্যাসের ফলে এই চাঞ্চল্য মনের স্বভাবে দাঁড়িয়েছে। আবার স্থিরত্বের জন্য পুনঃ পুনঃ চেষ্টা করলেই সে স্থিত হয়ে যাবে। অস্থির অর্থাৎ পরিবর্ত্তনশীল বস্তুতে পুনঃপুনঃ অভিনিবেশ বশতঃ মন অস্থিরতা অভ্যাস করেছে। পুনরায় স্থির বা নিত্য বস্তুতে অভিনিবেশ বাড়ালে নিশ্চয়ই মন স্থির হয়ে উঠবে।
  বৈরাগ্য বলতে বিরাগের ভাব, নশ্বর বস্তুতে আসক্তিহীনতা বুঝায়। জগতের নশ্বর বস্তুর প্রতি আসক্তি কমাইতে হলে অবিনশ্বর বস্তুতে আসক্তি বাড়ানো প্রয়োজন। সুতরাং অভ্যাস ও বৈরাগ্য মূলতঃ একটি কথারই এপিঠ ওপিঠ। অনিত্য বস্তু হতে তুলে নিয়ে মনকে যতই নিত্য- বস্তুতে অর্পণ করা যাবে, ততই উহা প্রশান্তভাব ধারণ করবে। এইভাবে বেদযজ্ঞ করতে করতেই মন সমত্ববুদ্ধিতে স্থিত হয়ে যায় তখন আর মন কোন আকর্ষণেই মন্দীভূত হয় না। জয় বেদযজ্ঞের জয়।


No comments:

Post a Comment