Thursday, 15 June 2017

বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ-- ১৫/ ০৬/ ২০১৭


বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ—১৫/০৬/ ২০১৭ স্থানঃ—পাটিয়া* ভুবনেশ্বর* উড়িষ্যা*
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করে সাধনশীল অবস্থায় থেকে সদায় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকো।]
আমরা এই পাপপুণ্য মিশ্রিত মানবজীবন নিয়ে যত সৎ চিন্তা করে বেদযজ্ঞে রত থাকবো ততই আমরা পরবর্তী জন্মের নিয়ন্ত্রণকে নিজের হাতে রাখতে পারবো। পাপপুণ্য মিশ্রিত মানবজীবনের পরবর্ত্তী জন্মের নিয়ন্ত্রণ কিরূপে হবে, সে সম্বন্ধে ঋষি- গ্রন্থের মত হল এই যে, জীবের মৃত্যুকালে যে ভাব প্রবলতর হয়ে উঠবে, সেটাই পরজন্মের নিয়ামক হবে। শুভ ভাব জাগ্রত হলে প্রথম ফল শুভই হবে। এর প্রভাবে এই জন্মের অশুভ কর্মের ফল নষ্ট হবে না তারা সুযোগমত ফল প্রসব করবে। সেরূপ মৃত্যুকালে অশুভ ভাব প্রশ্রয় পেলে পরবর্ত্তী জন্ম অশুভজনক হবে; কিন্তু শুভ কর্মগুলির ফল নষ্ট হবে না। সুযোগ সুবিধামত তারা আত্ম-প্রকাশ করবে। সুতরাং মৃত্যুকালে যাতে শুভ ভাব জাগ্রত হয়, এইজন্য সারা জীবন ভরেই সাধন অভ্যাস করতে হবে। এই দৃষ্টিতে সারাজীবনই মানুষের সাধনা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি।
  সাধনশীলের হঠাৎ দেহান্ত হলে পরজন্মে উন্নততর পিতৃ-মাতৃ-ক্ষেত্রে তার জন্ম হয় এবং ক্রমশঃ উন্নতি লাভ করতে করতে সে চলতে থাকে। জীবনের শেষ প্রাপ্তি ঈশ্বর- তুল্যতা লাভ; ঈশ্বরের প্রিয় হয়ে তাঁর নিত্যলীলায় সাথী হওয়া। ঈশ্বর- ভাবানুপ্রাণতা লাভ করলেই জীব তাঁর লীলায় সঙ্গী হতে পারে। জীবকে স্বীয় নিত্যলীলায় সঙ্গী করে নিতেই শ্রীভগবানের এই সৃষ্টিলীলা। জীব পরাভক্তির অধিকারী হলেই ঈশ্বরের লীলাসঙ্গী হতে পারে। সুতরাং বেদযজ্ঞ রহস্যের মধ্যেই জীবের ভক্তিবাদের নিগূঢ় তত্ত্ব ও সৃষ্টির রহস্য বিরাজমান; যা জেনে মানুষ নিজেকে ঈশ্বরের লীলাসঙ্গী করার পথে এগিয়ে চলেছেন যুগযুগান্তর ধরে—এটাই সনাতন ঋষিদের প্রদর্শিত মোক্ষের পথ। জয় বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের জয়।

No comments:

Post a Comment