বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ—১৯/ ০৬/ ২০১৭ স্থানঃ—পাটিয়া*
ভুবনেশ্বর* উড়িষ্যা*
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করতে করতে ভূমার সন্ধানে এগিয়ে চলো, তাহলেই
স্বল্প জ্ঞান সম্যক জ্ঞানে পরিণত হবে এবং জীবনের সমস্ত কর্মই বেদযজ্ঞে পরিণত হবে।]
মানব জীবনের দুটি দিক কর্ম ও জ্ঞান। এই জ্ঞান
ও কর্মের সমাধান নিয়ে আমাদের মনে যত উদ্বেগ। মনে হয়, এই দুই এর সমন্বয় হতে পারে
না। জ্ঞান অনেক বড়, কর্ম অনেক ছোট। জ্ঞান উদার, ব্যাপক, বিশ্বজনীন, মুক্তির হেতু ও
পরম পবিত্র বস্তু। পক্ষান্তরে কর্ম ক্ষুদ্র, সঙ্কীর্ণ, ব্যক্তিগত বন্ধনের হেতু,
অতএব নিতান্ত হেয় বস্তু। এইরূপ ধারণার বশবর্তী হয়ে জ্ঞানীরা কর্মকে কাছে ঘেঁসতে না
দিয়ে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। আর বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণ হেয় কর্মকে উপাদেয় করে মহাসাধন
ভূমিতে উন্নীত করেছেন। যে কোন কার্য করার উপায় হল—কর্মকে যজ্ঞবেদিতে উত্তোলন। অন্য
কর্ম বন্ধনের হেতু, কিন্তু যজ্ঞ- কর্ম বন্ধনের কারণ নহে। অন্য কর্ম ক্ষণিক, কিন্তু
যজ্ঞ- কর্ম অনাদিকাল হতে প্রজাসৃষ্টির সঙ্গেই আছে। অন্য কর্ম মরণের পথে নিয়ে যায়
কিন্তু যজ্ঞাবশেষ অমৃতপানে জীব শাশ্বত ব্রহ্মলোকে যায়। যজ্ঞ প্রতিনিয়ত বর্দ্ধনের
হেতু, দেবতাগণ পর্যন্ত যজ্ঞের দ্বারা তৃপ্ত হন। যে যজ্ঞ করে না, সে পাপ ভোজন করে,
সে চোর, পক্ষান্তরে যজ্ঞ সর্বপ্রকার বাঞ্ছিত ফল প্রদান করে। অধিক আর কি বলা যায়,
যজ্ঞ ভিন্ন অন্য কর্ম মানুষকে স্বরূপচ্যুত করে ভ্রষ্ট করে, অহংকারী করে তোলে। আর
যজ্ঞে ব্রহ্ম সর্ব্বগত হয়ে নিত্য প্রতিষ্ঠিত থাকেন। অতএব সকল কর্মকে যজ্ঞ করে নিতে
পারলেই তার সকল অপরাধ কেটে যায়। ভৌমকর্ম যজ্ঞে পরিণত হলে ভূমার সন্ধান আনে। স্বল্প
জ্ঞান সম্যক জ্ঞানে পরিণত হয়। জয় বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের জয়।
No comments:
Post a Comment