Saturday, 13 May 2017

বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ-- ১৩/ ০৫/ ২০১৭

বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ—১৩/ ০৫/ ২০১৭ স্থানঃ—পাটিয়া*ভুবনেশ্বর*উড়িষ্যা*
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করবে যুধিষ্ঠিরের ন্যায় জীবনের সত্য ও ধর্মকে রক্ষা করার জন্য।]
 ইন্দ্রপ্রস্থে ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরের প্রভাব ও সম্পদ এতই পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়লো যে তা দুর্যোধনের ঈর্ষার একটা বিরাট কারণ হয়ে দাঁড়ালো । দুর্যোধন এক বিশাল সভাকক্ষে পাণ্ডবদের দ্যূতক্রীড়ার আহ্বান জানালেন। ধৃতরাষ্ট্রের আদেশ মনে করে যুধিষ্ঠির আমন্ত্রণ স্বীকার করলেন এবং সেখানে দুর্যোধনের মাতুল শকুনির কপট চালে তিনি তাঁর সর্বস্ব হেরে গেলেন। পরিপূর্ণ সভাতে রাজরানী দ্রৌপদীর অত্যন্ত অপমান হওয়া সত্ত্বেও ধৃতরাষ্ট্রের প্রতি যুধিষ্ঠিরের শ্রদ্ধা একটুও কম হল না। ধৃতরাষ্ট্রও সমস্ত ধন ফিরিয়ে তাঁদের ইন্দ্রপ্রস্থে পাঠিয়ে দেন। দুর্যোধন পিতার এই কাজে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাঁকে বুঝিয়ে- সুঝিয়ে রাজী করালেন যে পাণ্ডবদের আবার আহ্বান করে তাঁদের বনবাস করার শর্ত রেখে পাশাখেলা হোক। যুধিষ্ঠির পাশাখেলার ভয়ানক পরিণাম অবগত ছিলেন এবং কৌরবদের কু-মতলবও জেনেছিলেন, কিন্তু জ্যেষ্ঠতাতের আদেশ পালনার্থে তিনি পুনরায় পাশা খেলতে রাজী হলেন। এবারেও যুধিষ্ঠির পরাজিত হলেন এবং এর ফলে তাঁকে ভাই ও রাজরানি দ্রৌপদীর সঙ্গে বারো বছর বনবাস ও এক বছর অজ্ঞাতবাসের জন্য যেতে হয়। জ্যেষ্ঠতাতের আদেশপালনরূপ ধর্ম পালনের জন্য তিনি সবকিছু নিঃশব্দে মেনে নিয়েছিলেন। ধন্য তাঁর পিতৃভক্তি।
  যুধিষ্ঠির অত্যন্ত ধর্মভীরু এবং সহনশীল ছিলেন। তিনি সর্বপ্রকার দুঃখ, ক্ষয়ক্ষতি সহ্য করতে পারতেন কিন্তু ধর্মের হানি সহ্য করতে পারতেন না। প্রথমবার দ্যূতক্রীড়ায় তিনি যখন তাঁর চারভাইসহ নিজেকে এবং দ্রৌপদীকে হারিয়ে বসেন, কৌরবেরা পূর্ণ সভাগৃহে দ্রৌপদীকে নানাভাবে অপমান করতে থাকেন, ধর্মপাশে আবদ্ধ থাকায় যুধিষ্ঠির একটি শব্দ উচ্চারণ না করে চুপ করে সবই সহ্য করেন। কোনো সাধারণ মানুষও নিজের সামনে নিজ পত্নীর এরূপ অপমান সহ্য করতে পারে না। যুধিষ্ঠিরের সম্মানে তাঁর ভাইয়েরাও কিছু না বলে সব সহ্য করেছিলেন। তাঁরা ইচ্ছা করলে বলপ্রয়োগ করে এই অমানবিক অত্যাচার বন্ধ করতে পারতেন। কিন্তু ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির দ্রৌপদীকে পণ রেখে হেরে যাওয়ায় তাঁরা চুপ করেছিলেন। যে দ্রৌপদীকে তাঁদের সামনে কেউ চোখ তুলে তাকালে তার প্রাণসংকট দেখা দিত, সেই দ্রৌপদীর চরম অপমান হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা প্রতিবাদ করতে পারলেন না। যুধিষ্ঠির জানতেন যে, শকুনি কপটতাপুর্বক পাশাখেলায় জিতেছেন, তবুও তিনি নিজে থেকে ধর্মত্যাগ করা উচিত বলে মনে করেননি। তিনি সব কিছু সহ্য করেও সত্য ও ধর্ম রক্ষা করেন। ধর্মপ্রেম এবং সহনশীলতার এর থেকে বড় উদাহরণ হয়তো জগতে কোথাও পাওয়া যাবে না।  ।।দ্বিতীয় পর্ব।। জয় বেদযজ্ঞের জয়।

No comments:

Post a Comment