Friday, 12 May 2017

বেদযজ্ঞ সম্মেলনঃ—১২/ ০৫/ ২০১৭ স্থানঃ—পাটিয়া-*ভুবনেশ্বর* উড়িষ্যা*
আজকের আলোচ্য বষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করে ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরের ন্যায় সত্য, ক্ষমা, ধৈর্য, স্থৈর্য, সহিষ্ণুতা ইত্যাদি গুণ অর্জন করার জন্য জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাও।]
মহারাজ যুধিষ্ঠির তাঁর পিতামহ ভীষ্মের ন্যায় অত্যন্ত উচ্চকোটির মহাপুরুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন সাক্ষাৎ ধর্মের অংশোদ্ভুত এবং ধর্মের মূর্তিমান স্বরূপ, তাই তাঁকে লোকে ধর্মরাজ নামে অভিহিত করতেন। তাঁর মধ্যে সত্য, ক্ষমা, ধৈর্য, স্থৈর্য, সহিষ্ণুতা, শৌর্য, গাম্ভীর্য, নম্রতা, -দয়ালুভাব ও অবিচল প্রেম ইত্যাদি বহু লোকোত্তর গুণ বিদ্যমান ছিল। তিনি তাঁর শীল, সদাচার ও বিচারশীলতার জন্য বাল্যকাল থেকেই অত্যন্ত লোকপ্রিয় ছিলেন। অল্পবয়সেই যুধিষ্ঠিরের পিতা পাণ্ডু স্বর্গগমন করেন। তখন থেকেই তিনি তাঁর জ্যেষ্ঠতাত ধৃতরাষ্ট্রকে পিতার তুল্য সম্মান ও শ্রদ্ধা করতেন এবং তাঁর আদেশ কখনও লঙ্ঘন করতেন না। কিন্তু কুটিল স্বভাব ধৃতরাষ্ট্র এঁর গুণের প্রশংসা শুনে মনে মনে হিংসা করতেন। ধৃতরাষ্ট্রের পুত্র দুর্যোধনের দুরভিসন্ধি ছিল, পাণ্ডবেরা কিছুদিনের জন্য হস্তিনাপুর থেকে দূরে গেলে তাঁদের পৈতৃক অধিকার হস্তগত করে তিনি রাজা হবেন। এই অন্যায় কার্যে তিনি তাঁর অন্ধ ও অজ্ঞ পিতাকেও রাজী করালেন। ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডবদের উৎসব দেখার অছিলায় বারণাবত যেতে বলেন। ধৃতরাষ্ট্রের আদেশ শিরোধার্য করে পাণ্ডবরা পাঁচ ভাই মাতা কুন্তীসহ বারণাবতে গেলেন। তাঁদের পুড়িয়ে মারার জন্য দুর্যোধন আগে থেকেই সেখানে এক লাক্ষাভবন তৈরী করে রেখেছিলেন। সেখানেই পাণ্ডবদের বাস করতে দেওয়া হয়। একরাত্রে সেখানে অগ্নিসংযোগ করা হয় কিন্তু খুল্লতাত বিদুরের কৃপায় তাঁরা অগ্নি- সংযোগের পূর্বেই কোনোমতে প্রাণ বাঁচিয়ে এক জঙ্গলের মধ্যে আশ্রয় নেন। পরে ধৃতরাষ্ট্রের পুত্রগণ তাঁদের মৃত মনে করে হস্তিনাপুরের রাজ্য হস্তগত করেন।
 কিছুকাল পরে দ্রৌপদীর স্বয়ংবর  সভায় যখন পাণ্ডবগণ উপস্থিত হন, তখন ধৃতরাষ্ট্রের পুত্রগণ জানতে পারেন যে, পাণ্ডবগণ জীবিত আছেন। ধৃতরাষ্ট্র তখন বিদূরকে পাঠিয়ে পাণ্ডবদের ডাকিয়ে আনেন এবং নিজ পুত্রদের সঙ্গে তাঁদের বিবাদ মিটানোর জন্য খাণ্ডবপ্রস্থে অর্ধেক রাজত্বে তাঁদের বাস করার প্রস্তাব দেন। যুধিষ্ঠির তাঁর এই আদেশ স্বীকার করে নিজ ভ্রাতাদের সঙ্গে খাণ্ডবপ্রস্থে বাস করতে থাকেন। সেইখানে তাঁরা এক পৃথক রাজ্য গড়ে তোলেন, তার নাম হয় ইন্দ্রপ্রস্থ। পাণ্ডবগণ ইন্দ্রপ্রস্থে এক রাজসূয় যজ্ঞের আয়োজন করেন, তাতে বহু রাজা- মহারাজা এসে বহুমূল্য উপহার প্রদান করেন এবং যুধিষ্ঠিরকে সম্রাট বলে স্বীকার করেন। জয় বেদযজ্ঞ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জয়।




No comments:

Post a Comment