বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ
অভিযান(২৯৮) তারিখঃ—৩১/ ০৫/ ২০১৮
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ-- [ বেদ যজ্ঞের দ্বারাই ভারতের আধ্যাত্মিক মাটিকে
জাগিয়ে তুলে বিশ্ববাসীকে চিরন্তন সুখ ও শান্তির পথ দেখাতে হবে।]
মহাভারতের অস্তিত্ব এখন ভারতে এসে দাঁড়িয়েছে।
নীলনদ থেকে ব্রহ্মদেশ পর্যন্ত যার ছিল বিশাল ক্ষেত্র, তা ভাই- ভায়ে ভাগ করতে করতে
এখন উপমহাদেশ নাম হারিয়ে ভারত ভূখণ্ড নামে পরিচিত হচ্ছে। ভাই ভাইকে চিনতে পারছে না
নিজেদের সনাতন ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে। এই ভারতের মাটিতেই অবতীর্ণ হয়, যুগে যুগে ভগবান,
মানবজাতিকে সত্যে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে।
ব্রহ্মা- বিষ্ণু – মহেশ্বর- নারায়ণ - রামচন্দ্র-
শ্রীকৃষ্ণ- মহাবীর- বুদ্ধ- চাণক্য- শংকর – চৈতন্য- রামকৃষ্ণ –বিবেকানন্দ আদি মহৎ
চরিত্রগুলিতে আমরা এই সত্যের পরিচয় পাই। এই ভারতবর্ষ চিরকাল বিশ্ববাসীকে সংগঠিত
করে সত্যের পথ দেখিয়ে এসেছেন। কালের কবলে ভারতবাসী তা যেমন ভুলে গেছেন তেমনি
বিশ্ববাসী এই সত্যের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ছন্নছাড়া এক দুর্বল আধ্যাত্মিক দর্শনের
উপর দাঁড়িয়ে আছেন। এর পিছনে ভারতের উপর বিভিন্ন দেশের আক্রমণ আছে ও ভারতের স্বাধীন
সত্তাকে কেড়ে নেওয়ার কৌশল আছে। হাজার বছর এই ভারতবাসী পরাধীনতার কবলে থেকে নিজের
সত্য ধর্ম হারিয়ে ফেলেছে ও নিজেরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যে বিভিন্ন
সম্প্রদায়ে ভাগ হতে বাধ্য হয়েছে। সেই হাজার বছরের পরাধীনতার যে দুর্বলতা এখনো
ভারতবাসীদের রক্তের স্রোতে প্রবাহিত হচ্ছে; তাই ভারতবাসী নিজেদের সনাতন রূপকে ভুলে
নিজেদেরকে হিন্দু- মুসলমান – বৌদ্ধ- খ্রিষ্টান- জৈন- পারসিক- ব্রাহ্মণ- কায়স্থ-
শূদ্র ইত্যাদি সম্প্রদায়ের ক্ষুদ্র গণ্ডীর মধ্যেই আবদ্ধ করে রেখেছেন। এইগুলি যে
তাঁদের মিথ্যা পরাধীনতার এক ভয়ংকর শৃঙ্খলের উপাধি মাত্র, তা তাঁরা উপলব্ধি করতেই
সাহস পাচ্ছেন না। যে ভারতের মাটিতে মানবজাতির সনাতন ধর্মকে রক্ষা করার জন্যে বেদ-
উপনিষদ –রামায়ণ- মহাভারত- গীতা- চণ্ডী ইত্যাদি সদগ্রন্থ অমর হয়ে আছে সেখানে
অন্যকোন গ্রন্থ আমদানি করে মানবজাতিকে পথভ্রষ্ট করে চিরকাল পরাধীন করে রাখার কৌশল
সাধারণ ভারতবাসী বুঝে উঠতে না পারার জন্যে তাঁরা নিজেদের বংশগৌরব হারিয়ে ফেলেছেন।
একরার কারো রক্তে আসুরিক মিথ্যা বিশ্বাসের বীজ প্রবেশ করলে সেই বীজ থেকে অসংখ্য
অসুর সৃষ্টি হবে প্রকৃতির নিয়মে। তখন এই অসুরের দল আর নিজেদের সনাতন রূপকে কিছুতেই
বিশ্বাস করতে পারবে না। তাঁরা তাঁদের বংশধর বৃদ্ধি করে নিজেদেরই পূর্বপুরুষদের
সনাতন ধর্ম বা সংস্কৃতির যে সত্যরূপ তার প্রতি আঘাৎ হানতেই থাকবে স্বভাবিক নিয়মে।
কিন্তু যে ভারতবর্ষকে হিমালয়ের ন্যায় পবিত্র আত্মা, সপ্তসিন্ধু ও পতিতপাবনী গঙ্গা
এবং বহু তীর্থক্ষেত্র ঘিরে রয়েছে নিজেদের পূর্ণ শক্তি দিয়ে তাঁকে কি কখনো আসুরিক
শক্তি ধ্বংস করতে পারে? যারাই নিজের সত্য সনাতন রূপ বা ধর্মকে ধ্বংস করতে আসবে
তারাই কালের কবলে পড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এই পৃথিবীর বুক থেকে। জয় বিশ্বমানব
শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়। হরি ওঁ তৎ সৎ।
No comments:
Post a Comment