বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ
অভিযান(২৯৫) তারিখঃ--- ২৮/ ০৫/ ২০১৮ আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ--[ বেদ
যজ্ঞ করে তোমরা আগে কোমল হৃদয়ের মানুষ হয়ে ঈশ্বরের আস্থাভাজন হও, তারপর পুরোহিত পদে বসে কর্ম কর ও সবার মঙ্গল করতে উৎসাহী হও।]
বেদযজ্ঞের মাধ্যমে যারা পরের মঙ্গল কামনা করে তারাই পুরোহিত। পুরোহিতদের
বিশেষ গুণ তাঁরা দরিদ্র ব্রাহ্মণ, দরিদ্র হওয়ার কারণে তাঁদের অন্তর সদায় থাকে কোমল
ও অহং ভাব বর্জিত। তোমরা তোমাদের হৃদয়কে পুরোহিতদের ন্যায় কোমল কর বেদ যজ্ঞের
মাধ্যমে। যদি তোমরা রূঢ ও কঠোর চিত্তের হও তবে তোমাদের আশপাশ হতে সবায় সরে পড়বে।
তাই তোমরা কোমল হৃদয়ের মানুষ হয়ে সবায়কে ক্ষমা করতে শিখো। যারা কঠোর
চিত্তের মানুষ তাঁদের জন্যে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো এবং কাজে কর্মে তাঁদের
সাথে পরামর্শ করো--- এই পরামর্শ করার মাধ্যম দিয়েই তোমরা
তাঁদের মন জয় করতে পারবে। তোমরা সংকল্প গ্রহণ করবে ঈশ্বরের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে
সবার মঙ্গলের জন্যে। সদায় মনে রাখবে ঈশ্বর তাঁর প্রতি নির্ভরশীলদের অতি ভালবাসেন। পুরোহিতরা
ঈশ্বরের প্রতি এতো বেশী নির্ভরশীল যে তাঁরা বৈদিক যাগ-যজ্ঞের মাধ্যম দিয়ে
অদৃশ্যশক্তিকে পঞ্চভূতের আধারে আবদ্ধ করতে সক্ষম। তাই বৈদিক সনাতন সমাজে
গর্ভাধানের পুর্বে পুরোহিত মঙ্গলবিধান পুর্বক অদৃশ্যশক্তির ভাণ্ডার থেকে শুভ
শক্তিকে গর্ভে স্থাপন করেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে সনাতন ধর্মের সমাজে একজন মানুষকে
অদৃশ্যশক্তির ভাণ্ডার থেকে আনা, তারপর তার শুদ্ধিকরণের সবরকম ব্যবস্থা করা,
নামকরণের মাধ্যমে বৈদিক শক্তির ভাণ্ডার থেকে নাম রাখা, শিক্ষার জন্যে হাতে খড়ি,
যথাসময়ে উপনয়ন, বিবাহ, বাড়ীতে পুজা- পার্বণ, তারপরে পঞ্চভূতে দেহলীনের সংস্কার,
পরিশেষে শ্রাদ্ধের মাধ্যমে পুনঃ অদৃশ্যশক্তির নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সব কাজই একজন
পুরোহিত বৈদিক সূত্র মেনে করে যান অন্তরে শ্রদ্ধা নিয়ে মঙ্গলের জন্যে নির্লোভ
প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, অহংকার ভাববর্জিত হয়ে। এই দরিদ্র ব্রাহ্মণ বা পুরোহিতের উপর
সনাতন ধর্মের মানুষের মঙ্গল নির্ভর করে। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞের জয়।
No comments:
Post a Comment