বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযান(২৫৫) তারিখঃ—১৭/
০৪/ ২০১৮
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদযজ্ঞ করে যাও
বেদভগবানের নিজের মুখের কথা শুনে ও তা পাঠ করে, তাতেই তুমি দিব্যদেহ, দিব্যদৃষ্টি
ও দিব্যজ্ঞান লাভ করবে।]
বেদভগবান
বেদযজ্ঞের মধ্যেই অবস্থান করছেন। তিনি বলেছেন—নিখিল বিশ্বজগতের আদিতে আমি, মধ্যেও
আমি, অন্তেও আমি। আমা হতেই উৎপত্তি, আমাতেই স্থিতি, আমাতেই বিরতি। আমি আরম্ভ, আমি
আধার, আমি আশ্রয়। “ অহমাদিঞ্চ মধ্যঞ্চ ভূতানামন্ত এব চ” ১০/২০। এত বড় ব্যাপক আমাকে
চিন্তা করা তোমার পক্ষে কঠিন বটে—শুধু কঠিন নহে—ভূমাকে ভাবনা করা অসম্ভবই। সুতরাং
আমার যে বিশেষ বিশেষ ‘ভূতি’ বা প্রকাশরূপ এটাই বলছি। বিভূতির মধ্যে আমার
ব্যাপনশীলতা হারিয়ে যাবে এরূপ মনে করিও না। ছোটোর মধ্যেও আমি বড়, অংশের মধ্যেও আমি
পূর্ণ, ভাগের মধ্যেও আমি অবিভক্ত।
দেবতাদের মধ্যে আমি বিষ্ণু, ব্যাপনশীল
পরমাত্মা। জ্যোতিষ্কগণের মধ্যে আমি কিরণশালী সূর্য। ইন্দ্রিয়গণের মধ্যে আমি মন,
জীবগণের মধ্যে আমিই চেতনা। স্থাবরের মধ্যে আমি হিমাচল। জলাশয়ের মধ্যে সাগর, যজ্ঞের
মধ্যে জপযজ্ঞ, বাক্যের মধ্যে একাক্ষর মন্ত্র ‘প্রণব’, বৃক্ষে আমি অশ্বত্থ, সর্পে
আমি বাসুকি, পশুর মধ্যে সিংহ, পক্ষীর মধ্যে গরুড়। দৈত্যকুলে আমি প্রহ্লাদ,
অস্ত্রধারীর মধ্যে আমি রাম। ক্ষয়কারীর মধ্যে আমি কাল। মাসের মধ্যে মার্গশীর্ষ,
ঋতুর মধ্যে বসন্ত। ছন্দে আমি গায়ত্রী। সত্ত্বগুণীর সত্ত্বগুণ আমি, তেজস্বীর তেজ
আমি, জ্ঞানীর জ্ঞান আমি, প্রতারকদের শঠতাও আমি। অর্থাৎ রামও আমি রাবণও আমি।
বাসুদেবরূপে উপদেশ দেই আমি গুরুরূপে, অর্জুনরূপে শুনিও আমি শিষ্যরূপে,
বেদব্যাসরূপে আমার বাণীর প্রচারও করি আমি শাস্ত্রজ্ঞরূপে। তাই যারা বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী হয়ে সদায় আমার বিশ্বরূপের ভজনা করে, পূজা
করে, আরাধনা করে তাঁরাই আমার প্রিয়। জয় বিশ্বমানব শিক্ষা ও বেদযজ্ঞ অভিযানের জয়। জয় বেদভগবান শ্রীকৃষ্ণের জয়।
No comments:
Post a Comment